রংপুর অঞ্চলের এক কৃষকের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোথায় আছেন বাহে সবাই? জেগে ওঠেন। জেগে উঠার মধ্যে দিয়ে এই সরকারকে পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেলে নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে হওয়া এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির একদফা দাবিতে সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল। মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সারা দেশে মানুষ ক্ষোভ ফেটে পড়েছে। কারণ এই অবোধ সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে রেখেছে। তার মুক্তির বিষয়ে ভূল ব্যাখ্যা করে যাচ্ছে সরকার। এরা কাপুরুষ। এরা জানে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি হয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ হলে তাদের ক্ষমতার মসনদ ভেঙে পড়বে।
দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জানিয়ে বলেন, তারা তো মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি। বরং তারা পাকিস্তানের সরকারের ভাতা খেয়েছিল। সরকার ২৫ হাজার কোটি টাকা লুট করতে সহযোগিতা করে আর ২৫ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে তারা একজন কৃষককে কোমরে দড়ি বেঁধে ধরে নিয়ে যায় এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এরা একটা লুটেরাদের সরকার। এরা লুট করে টাকা পাচার করে কানাডায় বেগমপাড়া বানিয়েছে। এখন কৃষকদের পক্ষ থেকে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা বলেছি, কৃষকদের ভর্তুকি দিতে হবে। কিন্তু তারা সব জায়গায় ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। শ্রমিকরা তার নায্যমূল্য পায় না। তারা কাউকে চাকরি দেয় না। চাকরি নিতে ২০ লাখ দিতে হয়। এ সময় সমাবেশে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ করে বলেন, আমার তো মনে হয়, কারো ২০ লাখ টাকার নিচে চাকরি হয়নি! বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে নানা অজুহাত দেখাচ্ছে সরকার, যখন তিনি ( প্রধানমন্ত্রী) কানের চিকিৎসা নিয়েছেন, তখন কি কোনো অজুহাত ছিল? এরা বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ হোক চায় না। সব কিছু দখল করে রেখেছ। তারা কোনো বিরোধী দল চায় না। তারা সব নিজেদের মত করে লুটে নিচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী সমালোচনা করে তিনি বলেন, শুনেছি শিক্ষামন্ত্রীর এলাকায় তার লোকেরা ৬ হাজার কোটি টাকার বালু খেয়ে ফেলেছে। কি আশ্চর্য। শিক্ষার অবস্থা! সরকারের প্রতি কুটুক্তি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আগে বলত ২০ টাকার তেল খেয়ে স্বর্গে যাবো গো। এখন বলতে হয় আমরা কি উড়াল সেতু, টার্মিনাল খেয়ে স্বর্গে যাবো গো? এ দেশের মানুষ তার সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে বাঁচতে চায়। তারা দুর্নীতির উন্নয়ন চায় না। আজ তাদের গাঁয়ে আগুন লেগেছে, তারা সব কূটনৈতিক নন্স ভুলে পিটার ডি হাসকে নিয়ে যা তা বলছে, কিছু টেলিভিশন তার পক্ষ নিয়ে কথা বলে যাচ্ছে। এরা কি ভুলে গেছে? দেশের কত মানুষ ও সন্তান সেখানে কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। একটি খবর শুনেন, এখন নাকি রেমিটেন্স আসা কমে গেছে। কারণ, যারা কষ্ট করে টাকা কামায় তারা এদেশে টাকা পাঠানোয় নিরাপদ মনে করছে না। এ সময় কৃষকদলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম প্রমুখ।