রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ অপরাহ্ন

পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আনতে রাসূল (সা.)-এর সিরাতের যথাযথ অনুসরণ করতে হবে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩

জাতীয় সিরাতুন্নবী সা উদযাপন কমিটির সেমিনারে বিচারপতি রউফ
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেছেন, রাসূল (সা.) ছিলেন জীবন্ত কুরআন। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে সীরাতের যথাযথ জ্ঞান ও তার প্রতিফলন না থাকার কারণেই ইসলামের কল্যাণ থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। তাই এই অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আনতে রাসূল (সা.)-এর সিরাতের যথাযথ অনুকরণ ও অনুসরণ করতে হবে। তিনি সকলকে রাসূল (সা.)-এর আদর্শ বাস্তবজীবনে প্রতিফলনের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সিরাতুন্নবী (সা.) উদযাপন কমিটি ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ‘সমকালীন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সীরাতে রাসূল (স.) শীর্ষক’ এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রবের সভাপতিত্বে ও জাতীয় সিরাতুন্নবী (সা.) উদযাদন কমিটির ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি ড. মাওলানা হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ করেন প্রফেসর ড. মো. আবুল কালাম পাটোয়ারি। সেমিনারে প্রবন্ধের ওপর আলোচনা পেশ বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সাইয়্যেদ কালাম উদ্দীন আব্দুল্লাহ জাফরী, দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সাবেক রেজিষ্ট্রার ও সাবেক জেলা জজ ইকতেদার আহমেদ, তা’মিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ খলিলুর রহমান মাদানী, মদীনাতুল উলুম কামিল মাদরাসা, ঢাকা-এর মুহাদ্দিস ড. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার, দ্যা ফোরাম ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যান্ড আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, বিশিষ্ট মনোরোগ চিকিৎসক ডা. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাংগঠিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মাঈনুদ্দীন প্রমূখ।
বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসূল (সা.)-এর মাধ্যমের বিশ^মানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রস্থ আল কুরআন নাযিল করেছেন। পবিত্র কুরআনে তিনি রাসূল (সা.)-কে মানবজাতির জন্য রহমত বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাই কুরআন থেকে উপকৃত হতে হলে আমাদেরকে কুরআনের যথাযথ জ্ঞান অর্জন ও অনুশীলন করতে হবে। প্রতিফলন ঘটাতে হবে বাস্তবজীবনে। মূলত রাসূল (সা.)-এর জীবনাদর্শই হচ্ছে সর্বোত্তম আদর্শ। তাই বিশ^ মানবতার মুক্তির জন্য কুরআনের আদর্শ অনুসরণের কোনই বিকল্প নেই। তিনি কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। সাইয়্যেদ কামাল উদ্দীন আব্দুল্লাহ জাফরী বলেন, ইসলাম মানুষের সকল সমস্যার সমাধান করে দিয়েছে। মানবজীবনের এমন কোন সমস্যা নেই যার সমাধান ইসলামে নেই। মূলত, মহানবী (সা.)কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিশ^বাসীর জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন। কিন্তু আমরা যে সুযোগ যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারছি না। ইসলামের যথাযথ জ্ঞান নেই আমাদের মধ্যে। রাসূল (সা.)-এর ওপর আমাদের তেমন কোন পড়াশোনাও নেই। মূলত, বিশ্বনবী (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে মানবতার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ। তিনি বিশ্বে শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। আলমগীর মহিউদ্দীন বলেন, আদর্শ ও মূল্যবোধভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদেরকে ইসলামের দিকেই ফিরে আসতে হবে। বিশ্বনবী (সা.) আমাদেরকে একটি বাস্তবসম্মত জীবন ব্যবস্থা উপহার দিয়েছিলেন । যার নাম ইসলাম। মানবজীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে ইসলামে। তাই অবক্ষয়মুক্ত সমাজ গড়তে সকলকে ইসলামের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। ইকতেদার আহমদ বলেন, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা)-এর ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী সাফল্য ছিলো মদীনা সনদ। তিনি এই সনদের মাধ্যমে মদীনায় একটি সফল কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সফল রাষ্ট্র নায়ক, সমাজ সংস্কারক ও আদর্শ সমরবিদ। পাশ্চাত্য প-িত মাইকেল এইচ হার্ট বিশ্বনবী হযরত মেহাম্মদ (সা.) বিশ্বের সর্বযুগের ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তাই আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই আর্ত মানবতার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ। ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, বর্তমান অস্থির বিশ্বে শান্তি ফিরে আনতে আমাদেরকে বিশ্বনবীর আদর্শের দিকেই ফিরে আসতে হবে। মূলত, মহানবী (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসাবে দুনিয়াতে আগমন করেছিলেন। তাই মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করেই এই অবক্ষয়ের বিশ্বে  শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তিনি মহানবী (সা.)-এর আদর্শ বাস্তবজীবনে অনুসরণ সকলের প্রতি আহবান জানান । ড. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার বলেন, রাসুল (সা.) মানবজাতির জন্য উত্তম আদর্শ। তাকেই অনুসরণ করে আমাদের জীবন চক্রাকারে চলতে থাকবে। মূলত সীরাত ছাড়া মানবজীবন পুরোপুরি অচল। তিনি আইয়্যামে জাহেলিয়াতে আলোর দিশারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য রাসূল (সা.)-এর আদর্শই অনুসরণ করতে হবে। তিনি জীবনের সকল ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) আদর্শ অনুসরণের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা বলেন, সকল দ্বীনের ওপর ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য হযরত মোহাম্মদ (সা.)কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। তাই দ্বীন বিজয়ী করার জন্যই আমাদেরকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, ইসলামে মাদককে হারাম করা হয়েছে। তাই দেশ ও জাতিকে মাদকাশক্তির হাত থেকে বাঁচাতে হলে মহানবী (সা.) আদর্শ অনুসরণ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ্যাডভোকেট মাঈনুদ্দীন বলেন, বিশ্বনবী (সা.) এক তমাসন্ন সময়ে দুনিয়াতে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি ইসলামের শ্বাসত আদর্শের মাধ্যমে সে অবক্ষয়িত সমাজেই তিনি এই সফল ও শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব বলেন, ইসলাম মানবসভ্যাকে বিকশিত করেছে। আর তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে আমাদের কাছে প্রেরণ করেছেন। রাসূল (সা.) ইসলামের এই শ্বাসত্ব বিধানের মাধ্যমেই মদীনায় একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com