মানুষ জীবনের তাগিদে, প্রয়োজনের কারণে বিভিন্ন মানুষের সাথে চলাফেরা করে। তাদের কারো সাথে একপর্যায়ে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব, ভালোবাসার সম্পর্ক। কারো সাথে হয় ক্ষণিকের সাক্ষাৎ। এরপর কালক্রমে আবার বিচ্ছেদ ঘটে। এই দেখা-সাক্ষাৎ, বিচ্ছেদের সম্পর্কের মাঝে মানুষের মনে গেঁথে থাকে প্রাপ্ত আচরণ এবং তার স্মৃতি। যাদের আচার-ব্যবহার ভালো, তাদের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয়। তাদেরকে সবাই ভালোবাসে। তাদের স্থান মেলে মনের কুটিরে। পক্ষান্তরে যাদের আচরণ ভালো নয়, মানুষ তাদের সাথে চলাফেরা পছন্দ করে না, যতটা সম্ভব তাদের এড়িয়ে চলে। মানুষের সাথে সুন্দর আচরণ, উত্তমভাবে কথা বলার জন্য আল্লাহ তায়ালা আদেশ দিয়ে বলেন, ‘আর স্মরণ করো, যখন আমি বনী ইসরাইলের অঙ্গীকার গ্রহণ করলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদাত করবে না এবং সদাচরণ করবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম ও মিসকিনদের সাথে। আর মানুষকে উত্তম কথা বলো, সালাত কায়েম করো এবং জাকাত প্রদান করো।’ (সূরা বাকারা : ৮৩)
সর্বোত্তম আখলাকের পূর্ণতাদানের জন্য নবীজী সা: এ ধরায় আগমন করেছিলেন। তাঁর উত্তম চরিত্রের কাছে মুগ্ধ হয়ে হার মানতে বাধ্য হতো তাঁর ঘোর বিরোধীও। নবীজী সা: বলেছেন, ‘আমি তো আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সর্বোত্তম চরিত্রের পূর্ণতা বিধানের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসনাদে আহমাদ : ৮৯৫১) প্রিয়নবী সা:-এর জীবনবিধান আমাদের জন্য অনুসরণীয়। প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে তিনি আমাদেরকে শিখিয়েছেন তা সুন্দর থেকে সুন্দরতম করার পদ্ধতি।
ভালো আচরণ করা, সুন্দরভাবে মানুষের সাথে কথা বলা খুব সহজ একটি আমল হলেও এর সওয়াব অগণিত। কেয়ামতের দিন এ আমলের সওয়াব হবে খুব ভারী। নবীজী সা: বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন মিজানের পাল্লায় সচ্চরিত্র সবচেয়ে বেশি ওজনী ও ভারী হবে।’ (তিরমিজি : ২০০২)।
যার চরিত্র ভালো, সে সমাজে সবার কাছে ভালো ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। নবী সা: তাকে পছন্দ করেন। নবীজী সা: বলেছেন, ‘যার চরিত্র সবচেয়ে ভালো, কেয়ামতের দিন সেই হবে আমার কাছে সবার চেয়ে প্রিয়।’ (তিরমিজি : ২০১৮) আল্লাহ তায়ালার কাছেও এমন ব্যক্তি প্রিয়। হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহভীতি ও নেক চরিত্র এমন এক গুণ, যার উছিলায় অধিক হারে মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসনাদে আহমাদ : ৯০৯৬ ) তাই সবার সাথে সদাচরণের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। এর মাঝে নিহিত রয়েছে ইহ-পরকালীন সফলতা। লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া রশিদিয়া এমদাদুল উলুম, গৌরনদী, বরিশাল