জনগণের দাবি আদায়ের এই অবরোধ আন্দোলকে গ্রেফতার করে বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল।
গতকাল রোববার (৫ নভেম্বর) জামায়াতে ইসলামীর পূর্ব ঘোষিত অবরোধ চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন থানা হতে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে নয়জনকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দেয়া বিবৃতি তিনি এ মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাদের মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ৫ ও ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার সড়কপথ, নৌ-পথ এবং রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন থানা হতে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে নয়জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিছু কিছু স্থানে পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে জনগণের দাবি আদায়ের অবরোধে বাঁধা প্রদান ও লাঠিচার্জ করেছে। আমি এই অন্যায় গ্রেফতার, হামলা ও বাঁধা প্রদানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। বিবৃতিতে বুলবুল বলেন, জনগণের দাবি আদায়ের এই অবরোধ আন্দোলন সংগ্রামকে গ্রেফতার করে বন্ধ করা যাবে না। দেশের মানুষ দেখছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার বাংলাদেশকে এক ভয়াবহ অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জনগণের বৃহৎ স্বার্থকে উপেক্ষা করে সরকার জামায়াতসহ বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গণগ্রেফতার করে পুরো দেশকেই আজ কারাগারে পরিণত করেছে। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের যেভাবে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গণগ্রেফতার করা হচ্ছে তাতে এটি সুস্পষ্ট যে আগামী নির্বাচন যেনতেন প্রকারে অনুষ্ঠিত করে আবারো রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিতে বদ্ধপরিকর এই বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠী। আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় বলেই তারা জামায়াতসহ সকল বিরোধী মতের উপর আবারো দমন-পীড়ন চালিয়ে আমাদেরকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, গ্রেফতার করে, মামলা দিয়ে, জুলুম-নির্যাতন ও দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে জামায়াতে ইসলামীকে দূরে রাখা যাবে না। আমরা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দেশ ও জনগণের পক্ষে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের গণদাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অব্যাহতভাবে আমরা আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি। বিগত দু’টি জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন নির্বাচন, অধিকাংশ আসনে এমপি হয়েছেন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রশাসনের সহযোগিতায় রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়। জনগণ এর পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চাই না। আমরা মনে করি, সরকার জনগণকে ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আন্তরিক হলে দেশের এই উদ্ভূত সমস্যার সমাধান সহজেই সম্ভব। তাই অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো এবং আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সকল নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামার মুক্তি দেয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় সরকারের সকল অন্যায় ও অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে যেভাবে রাজধানী ঢাকাবাসীসহ সমগ্র দেশবাসী জেগে উঠেছে, এবার আন্দোলন সফল করেই জনগণ তাদের অধিকার আদায় করে নিবে ইনশাআল্লাহ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি