দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের সমন্বয়ক মোস্তফা মনোয়ারের শ্রদ্ধেয় পিতা এ আর এম আব্দুল বারী মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৫ নভেম্বর রবিবার দিবাগত রাত ১টায় ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। আব্দুল বারী ৮ ছেলে, এক কন্যা, বহু নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদ। এক বিবৃতিতে দেশীয়’র আহবায়ক ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ বলেন, আব্দুল বারী ছিলেন একাধারে একজন কবি, শিক্ষক ও কৃষি গবেষক। তিনি দুনিয়াতে ৯ সন্তান রেখে গেছেন, যারা দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আলো ছড়াচ্ছেন। তাঁর মতো গুণীজনের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহ তাঁর পরিবারকে ধৈর্য ধারণ ও তাঁর রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করুন।
তাঁকে ডেঙ্গু জ্বর ও হার্টের সমস্যাজনিত কারণে গত ১৭ অক্টোবর কল্যাণপুরের ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগী ছিলেন। তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াবস্থায় লেখালেখি শুরু করেন। ‘পুষ্পাঞ্জলি’ নামে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ২০২১ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়। এছাড়াও রয়েছে অপ্রকাশিত কয়েকটি পা-ুলিপি।
পেশাগত জীবনে তিনি শিক্ষক ছিলেন। জোড়খালী ফাযিল মাদ্রাসায় দাখিল সেকশনের সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে বগুড়ার ভান্ডারবাড়ি সালেহা জহুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেন। কৃষির প্রতি তার ছিল অগাধ আগ্রহ। ২০০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণের পর কৃষিতে মনোনিবেশ করেন। কৃষি গবেষক হিসেবে জেলা ও উপজেলায় তার খ্যাতি রয়েছে। কৃষিকাজে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সরকারিভাবে তিনটি এবং বেসরকারিভাবে নূরজাহান ফাউন্ডেশন থেকে একটি পদক লাভ করেন তিনি।
শিক্ষানুরাগী আব্দুল বারী একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন মানিক পোটল দাখিল মাদ্রাসা, মানিক পোটল জামে মসজিদ ও শহীদ আব্দুল মালেক ট্রাস্ট। এছাড়াও তিনি বহু স্কুল, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় অগ্রগন্য ভূমিকা রেখেছেন।
৬ নভেম্বর সোমবার সকাল ৮.৩০ মিনিটে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজস্থ জামে মসজিদে তার প্রথম জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার কফিন নিজ গ্রাম মানিক পোটলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সেখানে দ্বিতীয় জানাযা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়।
১৯৪১ সালের ১ জানুয়ারি বগুড়া জেলার ধুনট থানার অন্তর্গত গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের মানিক পোটল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আব্দুল বারী জন্মগ্রহণ করেন।