রাজবাড়ীতে প্রতি বছর আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করা হয়। এবারও রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সারা দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ রাজবাড়ী জেলাতে হয়ে থাকে। এই জেলায় প্রতি মৌসুমে মুড়িকাটা ও হালি এই দুই জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়। এর মধ্যে আগাম জাত মুড়িকাটা। এবারও জেলা সদর, পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দ উপজেলায় এ জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফলন তোলা যায়। চাষিরা জানান, অতিবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ আবাদ পিছিয়ে গেছে। অনুকূল আবহওয়া ও ফলন ভালো হলে লাভবান হবেন তারা।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ পরিচর্যায় মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ জমিতে নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন। অতিবৃষ্টির কারণে যাদের জমিতে পানি জমেছিলো তারা কিছুদিন দেড়িতে পেঁয়াজ রোপণ করছেন।
সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা এলাকার কৃষক মো. ফটিক প্রামানিক বলেন, ৩ বিঘা(৩৩ শতাংশে ১ বিঘা) জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করেছি। এ বছর পেঁয়াজ আবাদে প্রচুর খরচ। এক বিঘা জমিতে ৬ মণ পেঁয়াজ লাগে। এক মণ পেঁয়াজের দাম ৫ হাজার ৫ শত টাকা। আমার তিন বিঘা জমিতে প্রায় ১ লক্ষ টাকার পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। এরপর সার, কীটনাশক, শ্রমিক খরচ দিয়ে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ঘরে তোলা পর্যন্ত আরও ১ লক্ষ টাকা খরচ হবে। ফলন ভালো হলে তিন বিঘা জমিতে ২৪০ মণ পেঁয়াজ হবে। বাজারে দাম থাকলে লাভবান হবো আশা করছি।
আরেক চাষি দুলাল প্রামানিক বলেন, এ বছর পেঁয়াজ বীজ, জমি চাষ, সার, সেচ ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় ঘরে উঠানো পর্যন্ত বিঘাপ্রতি মুড়িকাটা পেঁয়াজে খরচ পড়বে ৫০-৬০ হাজার টাকা আর বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ৬০-৭০ মণ। পেঁয়াজ গাছের বয়স ২০ দিন চলছে। আগামী দুই মাস পর এই পেঁয়াজ ঘরে তোলা যাবে। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম রাসূল বলেন, এ বছর জেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার হেক্টর। অতিবৃষ্টিতে আবাদ পিছিয়ে যাওয়ায় এখনো কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে। এ বছরও কৃষকেরা মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে লাভবান হবে।