দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতি মাসে ৩৬ কোটিবার সেবা নিয়ে থাকে মানুষ। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রাতিষ্ঠানিক ও জনবলের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় মন্ত্রণালয়। তিন লাখ মানুষ এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করেন। এর অধীনে রয়েছে ২০ হাজার প্রতিষ্ঠান। যে অবকাঠামো ও ব্যবস্থা আছে তাতে আরও তিন লাখ জনবল প্রয়োজন।
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তবে আমাদের অর্জনের সঙ্গে ঘাটতিও আছে। উপজেলাগুলোতে জনবল কম। সেখানে চিকিৎসক-নার্সরা কম থাকতে চান। একটা উপজেলায় পাঁচ লাখ মানুষ বাস করে। সেখানে প্রয়োজন ২০ জন চিকিৎসক। কিন্তু থাকেন মাত্র পাঁচজন। এতে করে সেখানে চিকিৎসা অপ্রতুল হয়ে যায়।
তিনি জানান, দেশে এখন অসংক্রামক রোগে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। এরমধ্যে হৃদরোগে প্রতিদিন মারা যায় ৪০০ লোক। প্রতি মাসে ১২ হাজার মানুষ মারা যায়। এ বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এ ধরনের রোগ জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে ঠিক রাখা যায়। নিয়মিত ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাস, মানসিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা- এসবের মাধ্যমে আমরা হৃদরোগ থেকে বাচতে পারি। হার্টে যাতে ব্লকেজ না হয় সে খেয়াল রাখতে হবে। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটকে ৪০০ থেকে সাড়ে ১২০০ বেডে উন্নীত করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বয়স্কদের জন্য ৪০টি ও শিশুদের জন্য ৪০টি আইসিইউয়ের ব্যবস্থা আছে। তবুও রোগীর সংকুলান হচ্ছে না। প্রতিদিন ১৩-১৪শ রোগী ভর্তি হয়। আগে হৃদরোগের সমস্যা হলেই দেশের বাইরে চলে যেতো। তা এখন বাংলাদেশেই হচ্ছে। বিদেশ গেলে যেখানে ১০-১২ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়, সেখানে এ হাসপাতালে এক থেকে দেড় লাখ টাকায় চিকিৎসা হয়ে যায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সারাদেশে প্রায় ১২ হাজার স্ট্যান্ট লাগানো হয়। সেখানে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটেই লাগানো হয় ৯ হাজার স্ট্যান্ট। সব বিনামূল্যে এখনো দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে আমি চেষ্টা করবো যে, ২৫ শতাংশ বা ২০০০ হাজার স্ট্যান্ট ফ্রি করে দেওয়ার। এতে খরচ হবে প্রায় ১৪ কোটি টাকার মতো। তবে পর্যায়ক্রমে সব স্ট্যান্টই বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবো।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাশেদা সুলতানা, স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিশোধের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল হাসান মিলন প্রমুখ।