কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৩ রানের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ আসর শেষ করেছে পাকিস্তান। শেষ ম্যাচে পরাজয়ের পর পাকিস্তান টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার বলেছেন আসর থেকে বিদায়ের পর দেশে ফিরে সবকিছু শুনতে তিনি প্রস্তুত আছেন।
শেষ ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের কাছে পরাজিত হয়ে ১০ দলের বিশ্বকাপে টেবিলের প ম স্থানে থেকে আসর শেষ করেছে পাকিস্তান। এনিয়ে টানা দ্বিতীয় আসরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে ব্যর্থ হলো ১৯৯২ বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ২০১৯ বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়েছিল আর্থারের কোচ হিসেবে প্রথম মেয়াদের মাধ্যমে।
এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের ৯ ম্যাচে চারটিতে জয়ী ও পাঁচটিতে পরাজিত হয়েছে বাবর আজমের দল। এর মধ্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরাজয়ের ম্যাচটিও রয়েছে। আর্থার বলেন, ‘আমি এখন ডার্বিশায়ারে পিক ডিস্ট্রিক্টে ফিরে যাব, সেখানে গিয়ে কয়েকদিন ছুটি কাটাতে চাই।’ ইংলিশ কাউন্টি মৌসুম শেষ হওয়ার পর আবারো পাকিস্তান দলে যোগ দেবেন আর্থার। পাকিস্তানের পাশাপাশি ডার্বিশায়ারের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কিন্তু আর্থারের এ বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক কিছু খেলোয়াড় প্রচ- সমালোচনা করেছিলেন। তাদের দাবি, পাকিস্তান দলে থাকাকালীন আর্থার কাউন্টিতে গিয়ে কোনো কাজ করার এখতিয়ার রাখেন না।
আর্থার স্বীকার করেছেন ১৯৯২ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান এবারের আসরে মোটেই ভালো খেলেনি। এ সম্পর্কে আর্থার বলেছেন, ‘আমরা প ম স্থানে থেকে আসর শেষ করেছি। গত ছয় সপ্তাহে আমরা যে ধরনের ক্রিকেট খেলেছি তাতে প ম স্থানে থাকাটাই আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমাদের খেলায় কোনা ধারাবাহিকতা ছিল না। দূর্ভাগ্যবশত: এটা আমাদের আসল পরিচয় নয়। আমরা সফল হতে পারিনি। কিন্তু এখানে কার্যত কোনো অযুহাত কাজ করবে না।’ আর্থার আরো বলেন, ‘আমি এখানে যে ধরনের কাজ করতে এসেছি তার সাথে অবশ্যই ডার্বিশায়ারের সংযোগ আছে। পাকিস্তান ক্রিকেট আমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি রয়েছে। এখানকার ড্রেসিং রুম নিয়ে আমি সবসময়ই চিন্তা করি।’
পাকিস্তানকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড। আগামী ১৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ে প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড। একদিন পর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার মোকাবেলা করবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আর্থার স্বীকার করেছেন সেরা চার দলই এবারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। চাপে থাকা পাকিস্তানী অধিনায়ক বাবর আজমের পক্ষেই কথা বলেছেন। তার মতে, বাবরকেই আরো কিছুদিন পাকিস্তান ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হিসেবে বহাল রাখা উচিৎ। একইসাথে আর্থার এটাও স্বীকার করেছেন দলের মূল বোলার নাসিম শাহ’র ইনজুরি দলের পারফরমেন্সে প্রভাব ফেলেছে।
আর্থার বলেন, ‘বাবরের সাথে আমার সম্পর্ক খুবই ভালো। সে বয়সে এখনো তরুণ, তাকে তার দায়িত্বে আরো কিছুদিন রাখা উচিৎ। নিজেকে প্রমাণের তার আরো কিছুদিন সময় লাগবে। সবসময়ই সে নতুন কিছু শিখছে এবং নিজের উন্নতি করছে। আমাদের খেলার মান আরো বাড়াতে হবে। আমি মনে করি আমরা নাসিম শাহ’র অনুপস্থিতি অনুভব করেছি। সে থাকলে আমাদের বোলিং আক্রমণ আরো ভালো হতো।’ ব্যাট হাতে পাকিস্তানী ব্যাটাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। টুর্নামেন্টের শীর্ষ ১০ ব্যাটারের মধ্যে কোনো পাকিস্তানির নাম নেই। আর্থার বলেন, ‘ব্যাটিং হিসেবে আমরা ৩৩০-৩৫০ রান করার দল হিসেবে ধারাবাহিক হতে চাই। কিন্তু আমাদের মধ্যে সেই ধারাবাহিকতা ছিল না। ফখর জামান যখন দলে এলো তখন কিছু ম্যাচে সেটা হয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো একজন খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করতে পারি না।’
আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য তিনি এখনই পরিকল্পনা শুরু করেছেন বলে আর্থার স্বীকার করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ ১৯৯৫ সালে টেস্ট ম্যাচ জয় করেছিল পাকিস্তান।