শীতের আমেজ যেন তার সাথে নিয়ে আসে উৎসবের আমেজকেও। শীত আসতে না আসতেই শুরু হয়ে যায় বিয়ে, বনভোজন, নানারকম মেলা আরো কত কি! উৎসবমুখর এ পরিবেশ সবার মনে ভালো লাগার সৃষ্টি করে। কিন্তু শীতকে উপভোগ করতে গিয়ে আমরা যাতে আমাদের স্বাস্থ্যের কথা ভুলে না যাই। তাই শীতকে উপভোগ করার পাশাপাশি নিজের স্বাস্থ্যের যতœ নেবেন তা নিয়ে আজকের আয়োজন। আবহাওয়া বদলের এই সময়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেশ কমে যায়। ফলে ঠা-া লাগা, হাঁচি, জ্বর, সর্দি, গায়ে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে এই শীতকালেও আপনি থাকতে পারেন ফিট।
১.পর্যাপ্ত পানি পান করুন: গবেষণায় দেখা গেছে যারা খাবারের পনেরো মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করে তারা তুলনামূলকভাবে কম খায়। কারণ পানি পেট ভরিয়ে দিয়ে খিদা অনুভূতি অনেকটা কমিয়ে দেয়৷ তাছাড়া শীতকালে অন্যান্য ঋতুর তুলনায় সবার পানি কম পান করা হয়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। অনেকে মনে করে গ্রীষ্মকালে বেশি পানি পান করার প্রয়োজন হয়। আসলে তা নয় বারো মাসই আমাদের শরীরের পানি প্রয়োজন।
২.শাক সবজি খান: যারা স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন বেছে নিতে চায় শীত তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হতে পারে। কারণ এ সময় বাজারে সাশ্রয়ী দামে প্রচুর তাজা শাকসবজি পাওয়া যায়। তাই আপনার খাবারের পাতে ভাতের তুলনায় বেশি শাকসবজি রাখুন। শাক সবজিতে ক্যালরি কম থাকে ও প্রচুর পুষ্টি ও ভিটামিন থাকে। যেমন শীতের সময় সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুলকপি, ফুলকপিতে ওমেগা – ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা কোলেস্ট্রলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রিত রাখে।
৩.ঘরের খাবার খান: যেকোনো দাওয়াতে যাওয়ার আগে পুরোপুরি খালি পেটে ক্ষুধা নিয়ে যাবেন না, এতে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা হয়ে যাবে। তাই দাওয়াতে সবার আগে ঘরের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেয়ে যান ফলে ক্ষুধা থাকবে না ও বাইরের খাবার কম খাওয়া হবে। বাইরের কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করলে চেষ্টা করুন তা ঘরে তৈরি করে নিতে। কারণ বাইরের খাবারের অতিরিক্ত তেল মসলা ব্যবহার করা হয় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
৪.প্রোটিনকে প্রাধান্য দিন: যেকোনো দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে গেলে চেষ্টা করুন কার্বোহাইড্রেট কম গ্রহণ করে প্রোটিন বেশি করে খেতে। যেমন ভাত বা রাইস জাতীয় খাবার কম নিয়ে মাছ, মাংস, ডিম খেতে পারেন। প্রোটিন জাতীয় খাবার আমাদের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে ও অনেকক্ষণ আমাদের পেটে ভরা অনুভূতি দেয়। প্রতিবেলার খাবারের সাথে বেশি করে সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করুন ও খেয়াল রাখুন আপনার খাবারে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে যেমন টমেটো, লেবু, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি। খাবারের পর এক বাটি টক দই খেতে পারেন টক দই হজমের ক্ষমতা বাড়ায় ও ক্যালসিয়াম দেয়।
৫.প্রতিদিন হাঁটুন: শীতের সময় সবার শরীর জুড়েই কিছুটা আলসেমি দেখা দেয়। কিন্তু ফিট থাকতে চাইলে আলসেমিকে বিদায় জানিয়ে রোজ ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন সঠিক গতিতে হাঁটলে রক্তের চলমান ফ্যাট ধ্বংস হয়ে যায়। নিয়মিত হাঁটার ফলে হজমের সমস্যা দূর হয় ও হার্ট ভালো থাকে। শীতের মৌসুমে কমবেশী অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয়ে থাকে, নিয়মিত হাঁটলে সেই খাবারের ক্যালরি বার্ন হয়ে যাবে। টানা হাঁটতে না চাইলে হা কয়েক ভাগে ভাগ করে নিন যেমন এক বেলা পনেরো মিনিট হাঁটুন পরের বেলা আবার পনেরো মিনিট।