সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
শ্রীমঙ্গলে পথে-প্রান্তরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া জগন্নাথপুরে রাণীগঞ্জ সেতু নিয়ে মিথ্যাচারে এলাকাবাসীর ক্ষোভ দুই যুগ ধরে কুইচা বিক্রি করে চালাচ্ছেন সংসার শতভাগ পাস : পলাশবাড়ী হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সাফল্য ফরিদপুর জেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা তারাকান্দায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ নিরাপদ সড়ক চাই দাউদকান্দি সেরা সংগঠনের পুরস্কারে ভূষিত মৌলভীবাজারে প্রতীকী শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করে ঘড়–য়া গ্রামের পন্ডিত সারদা-অন্নদা শহীদ দিবস পালণ সাদা মনের মানুষ আনারস প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব আঃ হক গাইবান্ধায় রেলের যাত্রীসেবা বাড়াতে বাদিয়াখালি রেলস্টেশনের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন

জগন্নাথপুর থানার ওসিকে রাজকীয় বিদায়

ইয়াকুব মিয়া (জগন্নাথপুর) সুনামগঞ্জ :
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

সুনামগঞ্জের প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলায় মাত্র ২৩ মাস ওসির দায়িত্ব পালন করে অবশেষে রাজকীয় বিদায় দিলেন মানবিক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান। বিদায়ের শেষ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বিদায় দেওয়া হয় তাকে। তার বিদায়কে জাকজমকপূর্ণ করে অবিস্মরণীয় করে রাখলেন উপজেলাবাসী। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিদায়ের প্রাক্কালে উপজেলার মানুষ সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে তাকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বিদায় জানান। এরপর সুসজ্জিত গাড়িতে করে উপজেলাবাসী তাকে রাজকীয় বিদায়-সংবর্ধনা দিয়ে বিদায় দেন। জানাগেছে ১৯৮৩ সাল থেকে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জগন্নাথপুর থানায় মোট ৩৮জন থানার ওসির দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ওসি মিজানুর রহমান তিনি এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে গেলেন। জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাবেক পৌরসভার মেয়র মিজানুর রশীদ ভূইয়া জানান, এমন একজন মহৎ ব্যক্তির বিদায়ে উপজেলার সর্ব মহলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনার আয়োজন স্মরণীয় হয়ে থাকবে যুগ- যুগান্তর। তাকে বিদায়ি সংবর্ধনা সভায় সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় এবং সবাই কাঁদে কাদ মিলিয়ে কাঁদে। এমন পুলিশ অফিসার জীবনে দেখিনি আর কি দেখা হবে। তিনি যেমন উপজেলাবাসীকে তাহার সততা ও আন্তরিকতা দিয়ে আপন করে নিয়েছিলেন। ঠিক তেমই উপজেলাবাসী তাদের যে কোন সমস্যা দেখা দিলেই মানুষ চলে যেত থানায় ওসির কাছে। তিনিই একমাত্র পুলিশ অফিসার মানুকে বুঝিয়ে দিয়েছেন টাকা পয়সা ছাড়া পুলিশ ন্যায় বিচার করে। জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের জননন্দিত ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লালন জানান, একজন সাদা মনের মানবিক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান। তিনি দীর্ঘ ২৩ মাস জগন্নাথপুর থানায় দায়িত্ব পালনকালে কারো সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়নি। চাকরির নিয়ম অনুযায়ী তাহার চাকরি স্থান বদলি জনিত কারণে তিনি অন্য থানায় ছলে যাওয়ায় উপজেলাবাসী আজ কাঁদলো। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক হাজী আব্দুল জব্বার জানান, ওসি মিজানুর রহমান থানা থেকে তিনি যখন বিদায় নেন তখন হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় দাড়িয়ে তাকে এক নজর দেখতে জড়ো হোন। এ যেন ছিল তাহার সততার রাজকীয় বিদায়। কথায় আছে রাজার বিদায় হয় রাজকীয় আয়োজনে। তিনি জীবিত অবস্থায় তার সততা ও আন্তরিকতার প্রমাণ পেয়েছেন, তিনি থানা থেকে তাহার বিদায়ের বেলায় তাকে মানুষ হৃদয় থেকে কি পরিমান ভালোবাসে তা তিনি নিজ চোঁখে দেখেছেন। জগন্নাথপুর পৌরসভার জননন্দিত প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম মুন্নান জানান, দীর্ঘ ২৩ মাসের দায়িত্ব পালন কালে তিনি কারো কাছ থেকে কোনু কিছু গ্রহন করেননি। উপজেলার সব শ্রেণী- পেশার মানুষ তাহার কাছে এসে ন্যায় বিচার- শান্তনা পেয়েছেন। এবং তিনিও সবার জন্য থানাকে উন্মুক্ত করে রেখেছিলেন। ধনী-গরীব সবাই তাহার কাছে সমান ছিলেন। এতে উপজেলাবাসীও তাহার প্রতি আন্তরিক ছিলেন। তিনি এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে গেলেন। বাস্তবে যে পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ তা সবাইকে বুঝিয়ে দিলেন। জগন্নাথপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন ভূইয়া জানান, ওসি মিজানুর রহমান তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করায় তার এমন সম্মান ও রাজকীয় বিদায় হয়েছে। তাকে বিদায় জানাতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। তিনি খুবই প্রশংসনীয় হয়ে উপজেলাবাসীর হৃদয়ে থাকবেন। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন জগন্নাথপুর উপজেলার সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কবির আহমদ হিরা জানান, ওসি মিজানুর রহমান একজন মানবিক ওসি, তার মতো ওসি বাংলাদেশ আরেকজন আছে কি না তা আমার জানা নেই। তাহার কাছে ধনী-গরীব সবাই সমান।
জগন্নাথপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বেলাল জানান, ধনী-গরীব সবার জন্য ওসি মিজানুর রহমানের দরজা সব সময় উন্মোক্ত ছিল। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইসহ সকল অপরাধের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ভুমিকা পালন করে জগন্নাথপুরে মানবতার উজ্জ্বল দিগন্ত তিনি স্থাপন করেছেন। জগন্নাথপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই জিন্নাতুল ইসলাম তালুকদার জানান, ওসি স্যার, মানুষের সেবা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যাতে করে মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে ও সস্থিতে থাকতে পারে। মানবতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে সকল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ওসি স্যার মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। ওসি মিজানুর রহমান তিনি যেখন জগন্নাথপুর থানা থেকে শাল্লা থানায় চলে যান তখন উপজেলাবাসী তাহার গাড়িকে সুসজ্জিত করে তাকে নিয়ে বিদায় দেন। তখন থানার সব পুলিশ সহ আশেপাশের মানুষ কেঁদেছিল। যা পৃথিবীর ইতিহাসে এমন পুলিশ অফিসার মিজানুর রহমানই নজির সৃষ্টি করলেন। উপজেলাবাসীর এমন রাজকীয় বিদায়ে-সংবর্ধনায় ওসি মিজানুর রহমান অভিভূত।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com