শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৪:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বিশ্বমানের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে : রাষ্ট্রপতি রাসূল (সা.)-এর সীরাত থেকে শিক্ষা নিয়ে দৃঢ় শপথবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে—ড. রেজাউল করিম চৌদ্দগ্রামে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫, আহত ১৫ চাহিদার চেয়ে ২৩ লাখ কোরবানির পশু বেশি আছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী রাজনীতিবিদেরা অর্থনীতিবিদদের হুকুমের আজ্ঞাবহ হিসেবে দেখতে চান: ফরাসউদ্দিন নতজানু বলেই জনগণের স্বার্থে যে স্ট্যান্ড নেয়া দরকার সেটিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার মালয়েশিয়ার হুমকি : হামাস নেতাদের সাথে আনোয়ারের ছবি ফেরাল ফেসবুক হামাসের অভিযানে ১২ ইসরাইলি সেনা নিহত আটকে গেলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থ ছাড় গাজানীতির প্রতিবাদে বাইডেন প্রশাসনের ইহুদি কর্মকর্তার লিলির পদত্যাগ

মোয়া বা মলা বিক্রি করে সাইফুলের মাসে আয় ৪০ হাজার টাকা, কর্মসংস্থান হয়েছে ২৫ নারী- পুরুষের

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

কুড়িগ্রামে মুড়ি ও গুড় দিয়ে সুস্বাদু মোয়া বা মলা তৈরি করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে সাইফুল ইসলামের। তার কারখানায় তৈরি করা মোয়া পাশ্ববর্তী তিন উপজেলায় ব্যাপক চাহিদা থাকায়, তা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তিনি। এছাড়াও তার বাড়িতে মোয়া তৈরির কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে আরও ২০-২৫ নারী-পুরুষের। সাইফুল ইসলাম (৪৫) কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের তিস্তা পাড়ের গোড়াই পিয়ার এলাকার বাসিন্দা। তার পরিবারে স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে একটি স্কুলে নবম শ্রেণি ও মেয়ে সপ্তম শ্রেণীতে লেখা পড়া করেন। জানা গেছে, সাইফুল ইসলাম দীর্ঘ ১০ থেকে ১২ বছর বাইসাইকেল ও রিকসার মেরামতের কাজ করেই তার টানাপোড়নের সংসার চলতো । হঠাৎ গত ৪ বছর আগে শারীরিক অসুস্থতায় বন্ধ হয়ে যায় সে পেশাটি। পরে উপায়ন্তর না পেয়ে প্রতিবেশির কাজ থেকে টাকা ধারদেনা করে চিকিৎসা ও সংসারের খরচ মেটাতেন। পরে ২০২০ সালে একটি বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে স্বল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করেন বাড়িতে মোয়া তৈরির কাজ। প্রথমের দিকে এ কাজে পরিবারের লোকজন সহযোগিতা করলেও পর্যাক্রমে বাজারে মোয়ার চাহিদা বেশি থাকায় এখন তার কারখানায় কাজ করছে ২০-২৫ জন নারী পুরুষ। প্রতিদিন তার কারখানায় উৎপাদন হচ্ছে ৮-১০ হাজার মোয়া বা মলা। তা বিক্রি করে শ্রমিক, পরিবহন ও অন্যন্য খরচ মিটিয়ে প্রতিদিন আয় করছেন দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। এখন বাজারে মোয়ার চাহিদা বেশি থাকায় খুবই ব্যস্থ সময় পার করছেন তিনি। সরেজমিনে দেখা গেছে, একটি বড় হাঁড়িতে জমাট বাঁধা গুড় তাপ দিয়ে তরল করা হচ্ছে। তরল গুড়ে মুড়ি মিশ্রিত করে তিনটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নারীরা তৈরি করছেন মোয়া বা মলা। এসব মুয়া রাখা হচ্ছে পাশের একটি ঘরে। সেখানে আবার ১০টি করে মোয়া দিয়ে করা হচ্ছে একটি করে প্যাকেট। সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি গত তিন বছর ধরে মলা তৈরি করছি। আমার এখানে ২০-২৫ জন নারী পুরুষ কাজ করছে। তাদেরও পারিশ্রমিক দিচ্ছি। আমারও দিন গেলে এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হচ্ছে। মোটামুটি সংসারটা এখন ভালো চলছে। আগে তো অভাব খুব ছিল। টাকা পয়সা বেশি থাকলে আরও বড় পরিসরে কাজটি করতে পারতাম। আমার এখানে প্রতিদিন ৮-১০ হাজার মলা তৈরি হচ্ছে। এসব মলা আমি নিজেই পাশ্ববর্তী তিনটি উপজেলায় বিক্রি করছি। সাইফুল ইসলামের স্ত্রী শাপলা বেগম বলেন, আমার সংসার আগে খুব খারাপ চলছিলো। আমার স্বামী অসুস্থ ছিল কাম কাজ ঠিকমতো করতে পারে নাই। আমরা গত তিন বছর ধরে বাড়িতে মলা তৈরি করছি। তা বিক্রি করে ভালোই চলছে এখন। সামান্য কিছু জমিনও বন্ধক নিছি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে করার চিন্তাভাবনা আছে। সাইফুল ইসলামের মোয়া তৈরির কারখানায় কাজ করছেন মাহমুদা নামের এক নারী। তিনি বলেন, আমরা অনেকে এখানে কাজ করি। দিন ২০০ টাকা পারিশ্রমিক পাই। স্বামীর ইনকাম ছাড়াও এখানকার আয়ে সংসারে যোগান দিচ্ছি। পাশাপাশি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ারও খরচ চালাচ্ছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) মন্টু মিয়া বলেন, আমার ওর্য়াডের সাইফুল আগে সাইকেল মেকারের কাজ করতো। কয়েক বছর থেকে বাড়িতে মুয়া তৈরি করে বিক্রি করছে। বাড়িতে মলা তৈরি করে ভালোই লাভবান হচ্ছে। পাশাপাশি তার এখানে ২০-২৫ জন নারী পুর“ষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সরকারি ভাবে তাকে যদি সহযোগিতা করা হয়, তাহলে আমার মনে হয় আরও বড় পরিসরে মুয়া তৈরির কাজটি করতে পারতো। এবিষয়ে কুড়িগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আলী আর রেজা বলেন, আমাদের এখানে যারা ট্রেনিং প্রাপ্ত তাদের প্রথমে ক্ষুদ্র লোন দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়াও সাইফুল ইসলামের বয়স বেশি থাকার কারণে তাকে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা যাচ্ছে না। কারণ ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী নারী পুরুষদের ট্রেনিং এর সুযোগ রয়েছে এখানে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com