দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকায় গানে গানে উন্নয়ন প্রচার সম্পন্ন করেছে সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক সংগঠন বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদ। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সিডিউল সময় পর্যন্ত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় নৌকা, বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলার ৫ প্রধান লোককবির মধ্যমণি গানের স¤্রাট মরহুম বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন) এর রচিত গান পরিবেশন করে সংগঠনটি। সর্বশেষ পাটগাতি ইউনিয়ন সদরস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগ সভাপতি কাজী শাহাদৎ হোসেনের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক গাজী আশিকুর রহমান, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এমডি মাহবুবুর রহমান মুরাদ, বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক সাংবাদিক বাউল আল হেলাল, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা মিতা ওঝা, আওয়ামী লীগ নেতা আলম শেখ, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিএম মাহমুদুল হক, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো.শামসুল হক, সাধারণ সম্পাদক লিংকন মোল্লা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল বিশ্বাস, পাটগাতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ফজর আলী বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বি খানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভায় বক্তারা টুঙ্গিপাড়ায় স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নৌকা প্রতীকের পক্ষে সংগীত পরিবেশন করায় বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদ সুনামগঞ্জের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রচারাভিযানে“মুজিব বাইয়া যাওরে তোমার ৬ দফারি নাও নিপীড়িত দেশের মধ্যে জনগনের নাও মুজিব বাইয়া যাওরে”নৌকা আগে আগে চলেরে ঐ নৌকাটা শেখ মুজিবের, নৌকা চিহ্নে ভোট করিও দান হিন্দু মুসলমান, মুজিব একবার আসিয়া সোনার বাংলা যাও দেখিয়া,বাংলার বীর মুক্তিসেনা জেগে ওঠেছে, আরে ও বঙ্গবন্ধু মুজিব ভাই জয়বাংলা বলিয়া আইছো সুখের সীমা নাই, নৌকা বানাইয়া দিল সুজন মেস্তরী বঙ্গবন্ধুর নায়েরে আল্লাজী কান্ডারী, আওয়ামী লীগ নাম নিয়া ৬ দফা এগিয়া জাগো জাগো বাঙ্গালী ভাই মুজিব বাতায়া,বাংলা মায়ের শ্রেষ্ট সন্তান বঙ্গবন্ধু নামরে,ছাড়ো নৌকা জয়বাংলা বলিয়ারে ভাই নাইয়া” ইত্যাদি প্রায় ৫০টি কামালগীতি এবং সাংবাদিক আল হেলাল রচিত, যে ঘর বানাইয়া দিলায় দেখতে চমৎকার লোকে বলেরে ঘর দিয়াছে হাসিনা সরকার, মাদার অব হিউমিনিটি বঙ্গবন্ধুর খাটিসোনা শান্তির দূত বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা, রাজু আহমেদ রমজান রচিত শেখ হাসিনা উন্নয়ন করছেন হবে স্মার্টবাংলা ও বাউল আমজাদ পাশা রচিত তোমরা ভোট দিওরে ও জনগন ভোট দিও শেখ হাসিনারে ইত্যাদি গান পরিবেশন করা হয়। গান পরিবেশন করেন বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক সাংবাদিক বাউল আল হেলাল, সাংবাদিক শিল্পী রাজু আহমেদ রমজান, বাউল আমজাদ পাশা, টুঙ্গিপাড়ার প্রবীণ শিল্পী বাউল আবু দাউদ বিশ্বাস খোকা ও সঞ্জয় রবি দাশ প্রমুখ। উল্লেখ্য বাংলাদেশের মরমী সংস্কৃতির উজ্জল নক্ষত্র ও সুনামগঞ্জের পঞ্চরতœ বাউলের মধ্যমণি বাউল কামাল পাশা, শুধু গান রচনাই নয় ঐতিহাসিক নানকার আন্দোলন,৪৭ এর গণভোট আন্দোলন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪‘র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান ও ৭০ এর নির্বাচন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অবদান রাখেন। ৭০ এর পাকিস্তান জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচন উপলক্ষে হাওরাঞ্চলে গণ সংযোগে আগত আওয়ামীলীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভামঞ্চে নৌকার পক্ষে গণসঙ্গীত পরিবেশন এবং ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে টেকেরঘাট ও সেলা সাবসেক্টরের বিভিন্ন মুক্তিফৌজ ক্যাম্পে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবনবাজী রেখে যুদ্ধ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধাদের উৎসাহিত করে জাগরনী গান পরিবেশনের পাশাপাশি এই শিল্পী স্বাধীকার স্বাধীনতা ও স্বায়ত্বশাসনের পক্ষে নিরলস শ্রম সাধনা অব্যাহত রাখেন। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাঃ উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাউল কামাল পাশা গেয়েছিলেন, “শেখ মুজিব কারাগারে আন্দোলন কেউ নাহি ছাড়ে, সত্যাগ্রহে এক কাতারে সামনে আছেন সামাদ ভাই ঢাকার বুকে গুলি কেন? নুরুল আমিন জবাব চাই”শীর্ষক ঐতিহাসিক গানটি প্রমাণ করেছে দেশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাউল কামাল পাশা রচিত এই গানটিই প্রথম গান। তাই বাউল কামাল পাশাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদানের জন্য আমরা জেলাবাসী প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।