বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২২ অপরাহ্ন

আল্লাহর জিকির

মিজান ইবনে মোবারক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৪

মানুষ দুনিয়াবি কাজকর্মে লিপ্ত থাকার অজুহাতে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করে। দিন শেষে কাজের অগ্রগতি-পদোন্নতিকে মূল সফলতা মনে করে। বস্তুত আল্লাহর বিধান উপেক্ষা করে কখনো সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছা যায় না। সাময়িক সফল মনে হলেও আখেরাতের জীবনে সে বড়ই ব্যর্থ। আখেরাতের সফল ব্যক্তিই প্রকৃত সফল ব্যক্তি। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলতা পাবে। আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী।’ সূরা আলে ইমরান-১৮৫)
ধোঁকার পেছনে পড়ে জীবনের মূল্যবান পুঁজি সময়কে নষ্ট করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়; বরং সফলতা অর্জনের জন্য আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে। তাঁর হুকুম-আহকাম মানতে হবে। তাঁকে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহর স্মরণকে জিকির বলে আখ্যায়িত করা হয়। জিকির কেবল সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রত্যেক এমন ভালো কাজ জিকিরের অন্তর্ভুক্ত- যার মাধ্যমে আল্লাহর স্মরণ লাভ হয়, আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ করা হয়। মূলত আল্লাহর স্মরণেই সফলতা বিদ্যমান। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পারো।’ (সূরা আনফাল-৪৫) বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করা চাই। কুরআন ও হাদিসে বারবার জিকিরের বিষয়টি উল্লেখ করে মানুষদের উৎসাহিত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব।’ (সূরা বাকারা-১৫২)
জিকির অন্তরের খোরাক। জিকিরের কারণে অন্তরে নূর পয়দা হয়। ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি হয়। আল্লাহর আনুগত্য করা সহজ হয়। যার অন্তর অন্ধকারাচ্ছন্ন সে খুব কমই আল্লাহর আনুগত্যে সাড়া দেয়। অন্তর জীবিত থাকে আল্লাহর স্মরণে। অন্তরের মৃত্যু হয় আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন হলে। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে তার প্রতিপালকের জিকির করে, আর যে জিকির করে না, তাদের উপমা হলো জীবিত ও মৃতের ন্যায়।’ (বোখারি-৬৪০৭)
জিকিরের কারণে বান্দা আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত হয়। মানুষের প্রকৃত দুশমন শয়তান তখন তার উপর প্রভার বিস্তার করতে পারে না। কিন্তু যখন সে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল হয়ে যায় তখন শয়তান তাকে সহজেই পথভ্রষ্ট করতে পারে। রাসূলুল্লাহু সা: বলেছেন, ‘শয়তান আদম সন্তানের অন্তরের উপর জেঁকে বসে থাকে। যখন সে আল্লাহর জিকির করে তখন সরে যায় আর যখন গাফেল বা অমনোযোগী হয় তখন শয়তান তার অন্তরে ওয়াস্ওয়াসা দিতে থাকে।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ-২২৮১)। যারা সময়কে আল্লাহর স্মরণে কাটায় তারা দয়াময় রহমানের প্রিয় বান্দা। তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে মহাপুরস্কার। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর অধিক জিকিরকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ (সূরা আহযাব-৩৫) লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া রশিদিয়া এমদাদুল উলুম, গৌরনদী, বরিশাল




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com