বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
উলিপুরে জাতীয় ফুল শাপলার আদলে ধানক্ষেত বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় ও সাহসী, সকলকে ধৈর্যের সাথে দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে-জেলা প্রশাসক পটুয়াখালী কমলগঞ্জে সীমানা পিলার উপরে ফেলে ভূমি জবরদখল করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা হলো জামায়াতের সাত শহীদের জন্মভূমি-অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে সচেতনতা সভা পাবনায় র‌্যাবের অভিযানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলার ২ আসামী গ্রেফতার নোয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এম এ ফয়েজের বিদায় সংবর্ধনা বাগেরহাট প্রেস ক্লাবকে সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্য দূর করতে হবে-বিশেষ সাধারণ সভায় বক্তারা নেত্রকোনায় বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত পটুয়াখালীতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গোল টেবিল বৈঠক

ধনবাড়ীতে আগ্রহ বাড়ছে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ রঙিন ফুলকপি চাষের

জহিরুল ইসলাম মিলন (ধনবাড়ী) টাঙ্গাইল :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৪

দেশের বিভিন্ন এলাকার সাথে টাংগাইলে ধনবাড়ী উপজেলাতেও চাষ হচ্ছে রঙিন ফুলকপি। দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও বেশ। পুষ্টিগুণ সাধারণ ফুলকপির চেয়ে বেশি। ফলন ও মুনাফা ভালো হওয়ায় চাষীদের মধ্যেও বাড়ছে আগ্রহ। রঙিন ফুলকপি চাষের সম্ভাবনা দেখছে কৃষিবিভাগ। মাঠজুড়ে বাহারী ফুলকপি। কোথাও বেগুনী, কোথাওবা হলুদ। আছে লাল-সবুজের শোভাও। নানা রঙের ফুলকপি চাষ হচ্ছে ধনবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। ক্রেতাদের নজর কাড়ছে; চাষীরাও পাচ্ছেন দাম। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপির চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহায়তায় পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপির চাষ করেছেন কৃষকরা। গতানুগতিক সাদা রঙের ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় এ সফলতা এসেছে। ধনবাড়ীতে রঙিন ফুলকপি চাষের বিষয়টি নতুন হওয়ায় আশপাশের অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিন খেত দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “খুচরা-পাইকারীতে বিক্রি বেড়েছে, একটা ৭০’ টাকা বললেও কিনছে ক্রেতা।” রঙিন ফুলকপি চাষে সফলতা পেয়েছেন মুশুদ্দি গ্রামের কৃষক সুজন। তাঁর বিশ শতক জমিতে যেন রঙয়ের মেলা বসেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আগেই রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু হয়েছে। তবে ধনবাড়ীতে এবারই প্রথম চাষ হচ্ছে। চারা ছাড়াও ফুলকপি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জৈব সার, কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে কৃষি বিভাগ। ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান জানান, চারা রোপণের পর থেকে আড়াই মাসের (৮০ দিনের) মধ্যে জমি থেকে ফসল তোলা যাচ্ছে। এই ফুলকপি চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে না। কৃষক আরশেদ আলী বলেন, ‘নিজ বাড়ির আঙিনার এক বিঘা জমিতে প্রতি বছর নানান সবজি চাষ করি। এবার স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে জমির অর্ধেকাংশে পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ ও গোলাপি রঙের ফুলকপি চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি।’ ‘এলাকার মানুষ আগ্রহী হয়ে ভালো দাম দিয়ে খেত থেকেই এই ফুলকপি কিনে নিচ্ছেন। বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি। মাঝারি আকৃতির একেকটি ফুলকপি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি। ভালো ফলন ও সাধারণ ফুলকপির চেয়ে বেশি দাম পাওয়ায় উৎসাহী হয়ে আগামী মৌসুমে পুরো জমিতেই এই রঙিন ফুলকপি চাষ করার আশা করছেন আরশেদ আলী। এ দিকে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষে আরশেদ আলীর সাফল্য স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।তার এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক মানুষ। তাদের কেউ ফুলকপি কিনছেন, কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন। এর চাষপদ্ধতি সম্পর্কে তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়েছি। আগামীতে আমিও এই রঙিন ফুলকপি চাষ করব আশা করছি।’ স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, ‘স্বাদ কেমন তা দেখতে জমি থেকেই ৫০ টাকা দিয়ে একটি হলুদ রঙের ফুলকপি কিনেছি।’ ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান আরে বলেন, ‘বৃহত্তর ময়মনসিংহে ফসলের নিবিড়তা বাড়ানোর প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলে এই প্রথম রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান আরো বলেন, ‘এটি স্থানীয় মাটি ও আবহাওয়ায় চাষে কতটা উপযোগী বা কেমন ফলন হয় আমরা দেখতে চেয়েছি। আমরা সফল হয়েছি,’ বলেন তিনি। তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়া ও চীনসহ অন্যান্য দেশে এ জাতের ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও সুন্দর। তার মতে, সাধারণ ফুলকপি চাষের যে পদ্ধতি ওই একই পদ্ধতিতে রঙিন ফুলকপি চাষ হয়। খরচ ও পরিশ্রম একই। শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়।ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। চাষীরা জানান, উৎপাদন করে এলাকায় সুনাম অর্জন করেছি এবং বাজারমূল্যও ভালো পাচ্ছি। বর্তমানে বাজারে প্রতিপিস কফি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে বৈচিত্র আনার পাশাপাশি আধুনিক চাষাবাদে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে কৃষিবিভাগ। ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি উপসহকারী মো: ফরিদ উদ্দিন বলেন, “পুষ্টির ভান্ডার হয় যে সবজিগুলো এর মধ্যে কোনটায় ভিটামিন-এ আছে কোনটায় ভিটামিন-বি আবার কোনটায় ভিটামিন-সি আছে।এবছর বিভিন্ন কৃষক দ্বারা ৫০ শতক জমিতে আবাদ করেছি। দিন দিন এটা জনপ্রিয় হচ্ছে এবং বাজার মূল্যও ভালো।” অ্যান্থোসায়ানিন থেকে রঙিন হয়ে ওঠে ফুলকপি। এটি মস্তিস্কের জন্য খুবই ভালো। সাধারণ ফুলকপির তুলনায় পঁচিশ শতাংশের বেশি বিটা ক্যারেটিন রয়েছে, যা ত্বক ও চোখ ভালো রাখে। এছাড়া রঙিন ফুলকপিতে রয়েছে নানা ভিটামিন ও মিনারেল। পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায় রঙিন ফুলকপি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com