বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও অব্যবস্থাপনায় বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মহাসঙ্কট চলছে। দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় প্রহসনের ডামি নির্বাচন করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এই ডামি প্রার্থী ও ডামি ভোটারের তামাশার নির্বাচন দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা ও স্বীকৃতি পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের চরম সঙ্কটে দেশের মানুষ মহা-বিপাকে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে আজ বিকেলে প্রহসন ও কলঙ্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের নিয়ে সংসদ অধিবেশন বসবে। আমরা এই অবৈধ সংসদকে প্রত্যাখ্যান করছি এবং অবিলম্বে প্রহসনের এই ডামি নির্বাচন বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির আলোকে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কট দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রহসনের ডামি নির্বাচন বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারের সামনে থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, সৈয়দ সিরাজুল হক, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী আগের সভাপতি তাকরিম হাসান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আলাউদ্দিন শেখ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানার আমির ও সেক্রেটারিরা।
অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অন্যদিকে, গ্যাস ও বিদ্যুতের চরম সঙ্কটে দেশের মানুষ মহা-বিপাকে পড়েছে। শিল্প-কারখানা ও গার্মেন্টসে উৎপাদন কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও গ্যাস-বিদ্যুৎ সঙ্কটের কোনো কার্যকর সমাধান হচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশকে এই মহাসঙ্কটের হাত থেকে রক্ষা করতে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ এবং সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তিনি সকলকে এই লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।’
তিনি বলেন, ‘সরকার আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে কলুষিত করেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে সমকামীতা ও বিজাতীয় সংস্কৃতি শিক্ষা দিচ্ছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের এই বাংলাদেশে ঈমান বিধ্বংসী কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা এদেশের মানুষ মেনে নেবে না। নৈতিকতা বিবর্জিত এই শিক্ষাক্রম বাতিল করতে হবে। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দীর্ঘদিন থেকে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা ও আলেম ওলামাদের বন্দী করে রেখেছে। আমরা অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় সরকারের সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে জনগণ তাদের মুক্ত করেই ছাড়বে। ইনশাআল্লাহ।’ প্রেস বিজ্ঞপ্তি