শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

গাজায় নিহতের সংখ্যা ২৭ হাজার ছাড়ালো, কবে থামবে ইসরায়েল?

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরুর পর থেকে গত বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ২৭ হাজার ১৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। শুক্রবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। গাজায় নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে অন্তত ৬৬ হাজার ১৩৯ জন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে গাজা কর্তৃপক্ষ। এদিকে, বার্তা সংস্থা ওয়াফার বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম তীরের জেনিন, নাবলুস ও হেব্রন শহরে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তিনটি শহরেই বাড়ি বাড়ি ঢুকে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এর মধ্যে জেনিনের শরণার্থী ক্যাম্পে সশস্ত্র সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতারের খবর জানা যায়নি। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে নাসের ও আল-আমাল হাসপাতালের কাছে তুমুল লড়াই চলছে। এতে প্রাণ সংশয়ে পড়েছেন হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবা কর্মী, রোগী এবং আশ্রিত বাস্তুচ্যুত মানুষেরা। উভয় হাসপাতালেই তীব্র অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি বিকেল থেকে ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১৯০ জন আহত হয়েছেন। চলমান সংঘাতের মধ্যেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। সম্প্রতি উত্তর গাজার হামাদ স্কুলের কাছে ‘কালো প্লাস্টিকের ব্যাগে’ অন্তত ৩০টি মরদেহ পাওয়া যায়। তাদের ইসরায়েলি বাহিনী হত্যা করে গণকবর দিয়েছে বলে দাবি করেছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।
নিউজ চ্যানেল। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, নিহতদের চোখ বেঁধে নির্যাতন ও হত্যা করে ব্যাগে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।
নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণায়: গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন মুসলিমরা। আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনকে সমর্থন না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। জো বাইডেনের ইসরাইল নীতি যুক্তরাষ্ট্রের আরব-আমেরিকানদের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভোটে তার নির্বাচনী সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ডেমোক্র্যাটিক পদপ্রার্থীর প্রচার ব্যবস্থাপক মিশিগানের ডিয়ারবর্ন ভ্রমণ করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে আরব-আমেরিকানদের সবচেয়ে জনবহুল এলাকায়। সেখানে তাকে ডেট্রয়েটের মেয়রসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা তাড়িয়ে দেন।
বাইডেন কংগ্রেসের কাছে ইসরাইলকে বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সামরিক সহায়তা চেয়েছেন এবং তার সরকার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির আহ্বানে ভেটো দিয়েছে। এর ফলে অনেক মুসলিম এবং মধ্যপ্রাচ্যের বংশদ্ভূত লোকজন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির থেকে বিশ্বাসঘাতকতার আশঙ্কা করছে।
আইনের অধ্যাপক এবং কৌতুক অভিনেতা আমের জাহর বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এটি একটি গণহত্যা যা আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ঘটছে এবং আমাদের জনগণ এবং লোকেরা খুব জোরালভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কোনো পরিস্থিতিতে জো বাইডেনকে সমর্থন করছি না। কিংবা খোলাখুলিভাবে কোনো রাজনীতিবিদ- যে শুধু যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে ইচ্ছুক নয়।’
গত বছরের ডিসেম্বরে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার নেপথ্যে যেসব অঙ্গরাজ্যের বড় ভূমিকা ছিল, সেসবের অন্তত ছয়টি অঙ্গরাজ্যের মুসলিম নেতারা আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে মুসলিমদের এককাট্টা করবেন। তবে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিমরা কাকে সমর্থন দেবে, সেটি অবশ্য তারা স্পষ্ট করেননি। এসব রাজ্যের ভোটারদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মুসলিম ও আরব-আমেরিকান। আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনের জয়ে তারা বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে। এদিকে ইসরাইলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি দিন-দিন খারাপ হচ্ছে। মানুষ খেতে পাচ্ছে না, শিশুরাও অভুক্ত, সদ্যোজাতের শিশুরাও যথাযথ সুরক্ষা পাচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা ‘হু’ বলছে, ফিলিস্তিনির গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে খাবারের ব্যাপক সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও সেখানে তারা খাবার সরবরাহ করতে পারছে না। নানা রকম অসুবিধা সেখানে। তল্লাশি কেন্দ্রগুলোতে বিলম্বের ফলে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। মৃতদের নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ইসরাইলি বাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া ফিলিস্তিনিদের লাশ দাফনে সময়ে এক চিকিৎসক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এরা (মৃতেরা) কোথায় আহত হয়েছিলেন, এদের নাম-পরিচয়ই বা কী, সেসব কিছুই আমরা জানি না! রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী খান ইউনিসের আল-আমল হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এখন তারা চিকিৎসকদের এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের এলাকা ছাড়তে বলছে। ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৭,০১৯ জন নিহত হয়েছে। আর হামাসের হামলায় ইসরাইলে ১,১৩৯ জন নিহত হয়েছে। সূত্র : ডেইলি সুবাহা, আল জাজিরা, জি নিউজ




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com