রংপুরের পীরগঞ্জে বিগত কয়েক বছর ধরে বানিজ্যিক ভিত্তিতে শিম চাষ করছেন চাষিরা। এ মৌসুমে শিমের ভালো দাম পেয়ে অনেক খুশি চাষিরা। পাইকারিতে শিমের কেজি ৫৫/৬০ বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে এবছর শিমের দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা।
চাষিরা জানান, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং অন্যান্য কৃষি পণ্যের সাথে তাল মিলিয়ে এবার শিমের দাম একটু বেশি।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে শাকসবজির চাষ হয়েছে। এ মৌসুমে হাইব্রিডসহ কয়েকটি জাতের শিম চাষ হয়েছে প্রায় ৩’শ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নে অধিক হারে শিম চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো শিম। কয়েক বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় শিম আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। তবে ফলন ও বাজার পেয়ে অনেক খুশি তারা।
কাবিলপুর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের শিম চাষি আনিছার রহমান জানান, এখন আমার শিম চাষের মাঝামাঝি সময়ে এসেছি। বর্তমানে পুরো দমে শিম বিক্রি করছি। শিম ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর গ্রাম থেকে কিনে বিভিন্ন মোকামে নিয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা বিকেলে জয়পুর গ্রামের তিন মাথায় থেকে শিম কিনে ট্রাকযোগে বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে বিক্রি করে তাদের অনেক সুবিধা। তিনি আরও জানান, ১০ শতাংশ জমিতে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দেড় মণ শিম উঠানো সম্ভব হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়েছে। হয়তো বা শিম চাষের শেষ সময়েও একই পরিমান বিক্রি হতে পারে।
জামালপুর গ্রামের আবু তাহের মিয়া জানান, বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহে জমি চাষ করে বরবটি লাগানো হয়। বরবটির আবাদ শেষ হলেই শ্রাবণ মাসে শিমের বীজ রোপণ করা হয়েছে। কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশি জাতের চিকন শিম ক্ষেতে ফলন শুরু হয়। এবছর শিম চাষের রোগ বালাই কম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এবছর বাজারও অনেক ভালো। এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। এছাড়াও এলাকার অধিকাংশ চাষিরা বলছেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে পরিবেশ বান্ধব কৌশলে শাকসবজি উৎপাদন বেড়েছে। সেই সাথে বিষ মুক্ত নিরাপদ সবজির উৎপাদনও বেড়েছে। যে কারণে সবজি ব্যবসায়ীরা গ্রাম থেকে শিম সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া শিম চাষের উপযোগী। এ অ লের মাটি উর্বর হওয়ায় কম খরচে বেশি শাকসবজি উৎপাদন সম্ভব। এ উপজেলার চাষিরা এখন নানা প্রযুক্তির মাধ্যমে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এছাড়াও উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন সবসময় চাষিদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছে।