দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বই পড়ায় আগ্রহী করতে অমর একুশে বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্টল দিয়েছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা। এখানে প্রতিদিনই বেশ কয়েকজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এসে বই পড়ছেন। এ বছর নতুন ১৮টি ব্রেইল পদ্ধতির বই প্রকাশ করেছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্টলের সামনে সাজানো ব্রেইল (বিভিন্ন সংকেত) পদ্ধতির বই। ঘর আকৃতির সংকেতগুলোতে হাত বুলিয়েই পড়তে পারছেন দৃষ্টিহীনরা। বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস পাঠে নিমগ্ন তারা। বিন্দুতে বিন্দুতে স্পর্শ করে অনর্গল পড়ে যাচ্ছেন পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। দৃষ্টিহীনদের বই পড়ার এমন দৃশ্য মুগ্ধ হয়ে দেখছেন মেলায় আগত দর্শনার্থীরা। স্টলে বসে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা পড়ছিলেন দৃষ্টিহীন বুশরা। জাগো নিউজকে বুশরা বলেন, ‘আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি। এরপর আবারও মেলায় আসবো। সামনে আমাদের বই উৎসব আছে। তাতে রেজিস্ট্রেশনও করেছি। হয়তো নতুন একটি বই পাবো পড়ার জন্য।’
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আলিফ পড়ালেখা করে দশম শ্রেণিতে। মেলায় স্টলে বসে সে পড়ছিল ফারসীম মান্নান মোহাম্মদীর লেখা বই ‘একটাই পৃথিবী’। জাগো নিউজকে আলিফ বলে, ‘মেলায় এসে খুবই ভালো লাগছে। এখানে আমাদের পড়ার জন্য এই একটাই জায়গা। এখানে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঁদের পাহাড় পড়েছি। এছাড়া আরও কিছু কবিতাও পড়েছি।’ কথা হয় স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা স্টলের বিক্রয়কর্মী নন্দিতা সাহার সঙ্গে। দৃষ্টিহীনদের বই পড়ায় আগ্রহী করাই তাদের উদ্দেশ্য জানিয়ে জাগো নিউজকে নন্দিতা বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে চলছে আমাদের কার্যক্রম। আমরা আবার তাদেরকে নিয়ে একটা উৎসবের আয়োজন করবো। এরই মধ্যে ২৪ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি দৃষ্টিহীনদের নিয়ে এই উৎসবে তাদের মধ্যে বই বিতরণ করা হবে।’
২০১১ সাল থেকে বাংলা একাডেমি চত্বরে দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধীদের জন্য স্টল দিয়ে আসছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা। প্রথম দিকে ছড়া, তারপর গল্প-কবিতার বই ব্রেইল পদ্ধতিতে প্রকাশ করে তারা। ২০১১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ১৩১টি বই প্রকাশ করেছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা।