বরিশালের উজিরপুরের রমজান খান সাব্বিরকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য ফি বাবদ ২৫ হাজার টাকা ও বই প্রদান করেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে সাব্বিরের হাতে এ আর্থিক সহায়তা ও বই প্রদান করা হয়। এ সময় বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়ে অর্থের অভাবে দুশ্চিন্তায় থাকা সাব্বিরকে আর্থিক সহায়তা বাবদ ২৫ হাজার টাকা ও বই প্রদান করেছি। ভবিষ্যৎ এ কোন ধরনের সহযোগিতা লাগলে তিনি তাও করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দমোদরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ খানের ছেলে সাব্বির। তার বাবা একজন কৃষি শ্রমিক। এছাড়াও পধে ঘাটে ভ্রাম্যমাণভাবে গামছা বিক্রি করে চার সদস্যের সংসার চালান তিনি। তার মেধাবী ছেলে সাব্বির মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৬৭.৭৫ নম্বর পেয়ে মেধাক্রমে ৪৭৪১ হয়ে ভর্তির সুযোগ পায় সে। যেখানে সংসারের খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে ছেলেকে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে সাব্বিরের পরিবার। রমজান খান সাব্বির বলেন, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাইভেট পড়ার মতো কোনো সুযোগ ছিল না। পরীক্ষার কোনো বইও কিনতে পারিনি। বোনের উপহার পাওয়া ডিজিটাল শুমারির ট্যাব দিয়ে অনলাইন ও ইউটিউব থেকে দেখে পড়া শুনা করেই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। পরীক্ষায় ৬৭.৭৫ নম্বর পেয়ে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। ছোটবেলা থেকে মেধা ও পরিশ্রমকে সঙ্গে নিয়ে অভাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সাব্বির বলেন, বাবা সব সময় বলছেন যত কষ্ট হোক স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবেন। বাবার এ আশ্বাসে নবম শ্রেণিতে যখন বিজ্ঞান বিভাগ নেই, তখন থেকেই লক্ষ্য ঠিক করি চিকিৎসক হব। সেই লক্ষ্য পূরণে উজিরপুরের এইচএম ইনস্টিটিউট থেকে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। পরে ভর্তি হন সরকারি গৌরনদী কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায়ও পেয়েছেন জিপিএ-৫। সাব্বিরের বাবা ফিরোজ খান বলেন, সাব্বির পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কীভাবে ছেলেকে ভর্তি করব আর পড়ালেখার খরচ চালাবো এটা নিয়েও চিন্তায় ছিলাম। ডিসি স্যার আমার ছেলের পড়ার পথ সহজ করে দিয়েছেন,ওনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।