পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলাধীন ৭নং সেখমাটিয়া ইউনিয়নের চর রঘুনাথপুর গ্রামের নগেন্ত্রনাথ মাঝির কন্যা স্বামী পরিত্যাক্তা সুনীতি রানী মিস্ত্রী(৪৭) প্রতিপক্ষের জমি-বাড়ী দখলের হুমকি আতংকে দিশেহারা। জানা গেছে নগেন্ত্রনাথ মাঝি মৃত্যুর পূর্বে ২০১০ সালে সুনীতি রানীর নামে স্থানীয় মাপের ১২.৫০ কাঠার একটি দলিল সম্পাদন করে এবং সুনীতি রানীকে ০১ কন্যা সহ পিতার ঐ বাড়ীতে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল নির্মল কান্তি সিকদার, মনিমোহন মাঝি, আবেদ আলী শেখ, হাওয়া বিবি নগেন্দ্রনাথের সহোদর ভাই জিনেন্দ্রনাথ সৃষ্টি করে দুইটি দলিল সম্পাদন করেন ২০০৬ সালে। ঐ দলিলের বিরুদ্ধে নগেন্দ্রনাথ নিজে বাদী হয়ে পিরোজপুর বিজ্ঞ কোর্টে দেওয়ানী মোকর্দ্দমা করেন। নগেন্দ্রনাথের মৃত্যুর কারণে মামলাটি তদবিরের অবহেলায় প্রতিপক্ষের অনুকূলে রায় হয়ে গেলে ঐ মামলায় সুনীতি রানী পক্ষ হয়ে মহামান্য হাইকোর্টে আপিল করলে মহামান্য হাইকোর্ট ষ্টে এন্ড স্টাটাসকো জারি করেন। প্রতিপক্ষরা মহামান্য হাইকোর্টের ঐ আদেশের তোয়াক্কা না করে জমি দখল করে নেয়। এখন আবার বাড়ী দখলের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন। এ ব্যপারে সুনীতি রানী নাজিরপুর থানায় অভিযোগ দাখিল করলে থানা-পুলিশ প্রতিপক্ষকে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করার জন্য উভয় পক্ষকে অনুরোধ করেন বলে থানা সূত্রমতে জানা যায়। প্রতিপক্ষরা থানা-পুলিশের এ অনুরোধকেও বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বাড়ী দখলের জন্য সুনীতিকে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সোহরাব হোসেন এ প্রতিনিধিকে জানান, তার বাবা নগেন্দ্রনাথ ও তার কাকা জিতেন্দ্রনাথ নামক দুই ভাই ছিলেন। কিন্তু জিতেনকে আমি দেখিনাই, জিতেন নামে কোন খানা বা ভোট নাই আমার ওয়ার্ডে। তবে জিতেন্দ্রনাথ স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক পূর্বে নিরুদ্ধেশ হয়ে যাওয়ায় নগেন্দ্রনাথের বাবা নন্দনালাল মাঝির সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক একমাত্র ওয়ারিশ হিসেবে নগেন্দ্রনাথ মাঝি। এ ব্যাপারে ঐ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাড: আলহাজ¦ ওহাব শিকদার কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি ওয়ারিশ সনদপত্র সুনীতি রানী এ প্রতিনিধিকে দেখান এবং বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে বলে জানান। প্রতিপক্ষদের জিতেন্দ্রনাথ সৃষ্টিকৃত দলিল সম্পাদন করার বিরুদ্ধে মামলা আনায়ন করেন নগেন্দ্রনাথ মাঝি। এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষের একজন নির্মল কান্তি সিকদার এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপ করলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান জিতেন এসে আমাদেরকে দলিল দিয়েছে এবং থানায় জিডিও করেছেন। কিন্তু জিডি নম্বর জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। স্থানীয় মোয়াজ্জেম হোসেন শিকদার ও সায়েম সহ একাধিক সূত্রে জানা যায় যে, জিতেন্দ্রনাথ সৃষ্টিকৃত, জিতেন নগেনের ভাই নিরুদ্দেশ আমাদের জন্মের পূর্ব থেকেই। আমরা তাকে কোনদিন দেখিনাই এবং বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় তার কোন নামও নাই, তিনি বেঁচে আছেন কিনা তাও জানি না। ঐ ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তার দপ্তরে যোগাযোগ করে জানা যায় ৭৯৪ নং খতিয়ানে নন্দ কুমারের একমাত্র সন্তান নগেন্দ্রনাথ মাঝি বলে মিউটিশন কেস সম্পাদন করেন যাহাতে মোঃ তবিবুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) (অঃ দাঃ) নাজিরপুর, পিরোজপুর এর স্বাক্ষর রয়েছে। ঐ খতিয়ানে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাকির নামক তহসিলদার মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে প্রতিপক্ষকে দাখিলা দিয়ে দলিল সম্পাদন করার সুযোগ করে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ঐ ইউনিয়নের ০২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবুল খান প্রতিপক্ষের দলিলের পরিচিত হইয়া দলিল সম্পাদন করিয়া দিয়াছে বলিয়া ভূক্তভোগী অভিযোগ করেন। বর্তমানে মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশন সুনীতি রানী মিস্ত্রীর আপিলের অনুকূলে আবারও ষ্টে এন্ড ষ্টাসাসকোর আদেশ দেন এবং ০৬ মাসের রুল জারি করেন। উক্ত আদেশের কপি দিয়া নাজিরপুর থানা অফিসার ইনাচার্জ বরাবরে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও প্রতিপক্ষরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের হুমকি প্রদান করিয়া সুনীতিকে হুমকি আতংকে দিশেহারা করে রাখছে।