বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৬ অপরাহ্ন

রাখাইন:আবারও এপারে ভেসে আসছে গোলার শব্দ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ মার্চ, ২০২৪

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পুনরুদ্ধারে আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ। হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া হচ্ছে গোলাবারুদ। এমন পরিস্থিতিতে তিনদিন ধরে থেমে থেমে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের এপারে ভেসে আসছে গোলার বিকট শব্দ। এমন অবস্থায় রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশের আশঙ্কায় বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত শনি ও রোববার (২ ও ৩ মার্চ) রাতভর ও সোমবার (৪ মার্চ) দিনে উখিয়ার থাইংখালি, টেকনাফের নাইটং পাড়া-হ্নীলা ও হোয়াইক্যং সীমান্তের এপারের বাসিন্দারা গোলার শব্দ শুনতে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সবর্শেষ সোমবার (৪ মার্চ) ভোর ও সকালে মর্টারশেল ও হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গোলার শব্দ উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের এপারে ভেসে আসে। এ ঘটনায় সীমান্তের এপারের মানুষ চিংড়ি ও কাঁকড়া ঘেরসহ ধানচাষে যেতে ভয় পাচ্ছেন। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, গত কয়েকদিনে হ্নীলা সীমান্তের এপারে দফায় দফায় রাতে ও দিনে বিকট শব্দ ভেসে আসছে। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়েছি রাখাইনে আরাকান আর্মির হাতে দখলকৃত গ্রাম পুনরুদ্ধারসহ মংডুর রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপ জান্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে এমন ঘটনায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা সর্তক পাহারায় রয়েছেন।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনের সংঘাত দিনের পর দিন বাড়ার কারণে সীমান্তের এপারে বসবাসকারী অনেক মানুষ তাদের চিংড়ি-কাঁকড়ার ঘের ও ধানচাষে যেতে না পেরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে চাষাবাদে, চিংড়ি ঘেরে ও কাঁকড়া ধরতে যেসব জেলে ও শ্রমিক কাজে যেতে না পেরে বেকার হয়ে পড়েছেন তাদের প্রতি সরকারি ও বেসরকারিসহ এনজিও সংস্থার পক্ষ থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে একটানা তিন দিন ধরে থেমে থেমে হোয়াইক্যং সীমান্তের এপারে বিকট শব্দ ভেসে আসছে। সীমান্তের ওপারে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উখিয়ার থাইংখালি রহমতের বাসিন্দা হারুন রশিদ বলেন, শনি-রোববার রাত থেকে থাইংখালি রহমতের বিল সীমান্তের ওপারের বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে। সোমবার সকাল ১০টার পরে হঠাৎ পর পর বিকট আওয়াজ এপারে ভেসে আসলে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় যেসব চাষিরা সীমান্তবর্তী ক্ষেতে কাজ করছিলেন তারাও ভয়ে নিরাপদ স্থানে চলে আসেন। বেশ কয়েকটি গোলার শব্দ শোনা গেছে।
উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মুসা আকবর বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে দেশটির অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতে রাখাইনে ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪০ জন রোহিঙ্গা নিহত, ১০৮ জন আহত এবং ৪ জন অপহরণের শিকার হয়েছে বলে জেনেছি। আমরা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উখিয়া-টেকনাফে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে গঠিত রোহিঙ্গা এফডিএমএন প্রতিনিধি কমিটির পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা জানাই। পাশাপাশি আরাকানে রোহিঙ্গাদের জন্য অবিলম্বে এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক নিরাপদ অ ল প্রতিষ্ঠাসহ সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা ও নির্যাতন বন্ধের দাবি করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন আন্তজার্তিক সংস্থায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। ওপারের পরিস্থিতির কারণে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সীমান্তে বসবাসরতদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com