শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৭ অপরাহ্ন

তাড়াশে সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

গোলাম মোস্তফা বিশেষ প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের নারীকে গহনা বিক্রি করে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেনকে ঘুষ দিতে হয়েছে সরকারের দেওয়া বিন্যা মূল্যের বকনা বাছুর গরু পাওয়ার জন্য। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার ৬নং তাড়াশ সদর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে। অভিযোগ উঠেছে, ওই গ্রামের নারায়ন চন্দ্রের মেয়ে কল্পনা বালাকে (ভোটার আইডি নং-৭৮০৭৭৩৪৮০৬) তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেন নগদ ১০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে বিনামূল্যে সরকারের দেওয়া সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ পশু হাসপাতাল থেকে বকনা বাছুর নিয়ে দেন। এ ছাড়াও ঘুষের টাকার বিষয় কাউকে না বলতেও নিষেধ করেন তিনি। শুধু কল্পনা বালাই না বিনামুল্যে সরকারের দেওয়া গরু পেতে তার মত তাড়াশ সদর ইউনিয়নের আরো অনেকেই গুণতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এখন মুখ খুলতে শুরু করছেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে অভিযোগের বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে ভুক্তভোগী কল্পনা বালার বাড়িতে গিয়ে তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আকতার হোসেন আমাদের এই বাড়িতে এসে গরু দেবে বলে ১০ হাজার টাকা দাবী করেন। না দিলে গরু পাওয়া যাবেনা বলে জানান। আমরা অভাবী মানুষ বড় একটা গরু পেলে উপকার হবে ভেবে আমার কানের গহনার দাম ১৫ হাজার টাকা তা ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে আকতার হোসেনের হাতে দেই। গরু পাইছি তবে এই গরু অনেক ছোট। তা বিক্রি করলেও ১০ হাজারের বেশি হবে বলে মনে হয় না। এ ছাড়াও বোয়ালীয় গ্রামের নকুল কর্মকারের স্ত্রী তপ রানীর নামে বকনা বাছুর উত্তোলন দেখানো হলেও সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না এই তপ রানী। তপ রানীর ছেলে ভরত কর্মকার জানান,আমার মায়ের নামে গরু দেওয়া হয়েছে তালিকায় দেখলাম কিন্তু আমরা এই গরু পাইনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন ভুয়া নাম দিয়ে গরু তুলে বাড়িতে খামার করেছেন প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেন। অভিযোগ রয়েছে, এই আকতার হোসেন ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালায়। সরকারের দেওয়া বিনামুল্যে প্রতিবন্ধী,বিধবা,বয়স্ক,মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড টাকার বিনিময়ে বিক্রি শুরু করেন। গত ১৫ জুলাই ২০২৩ ইং তাড়াশ সদর ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো.বাবুল শেখ পদত্যাগ করে পৌর সভার নির্বাচনে অংশ গ্রহণের পর থেকে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন এই আকতার হোসেন। এরপর থেকেই বড্ড বেয়াপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। মেতে ওঠেন ঘুষ বানিজ্যে। আকতার হোসেনে বিরুদ্ধে দূর্নীতির ও সেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন সংশিষ্ট ইউনিয়নের নির্বাচিত ইউপি সদস্যরা। তাড়াশ সদর ইউনিয়নের ৪ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, অবৈধ্য ভাবে প্যানেল চেয়ারম্যান হয়ে পরিষদ সে দূর্নীতির স্বর্গ গড়ে তুলছেন । প্রতিবাদ করলেই সেই ইউপি সদস্যকে ইউনিয়নের কোন প্রজেষ্ট (উন্নয়ন) কাজ দেওয়া হয় না। যে ইউপি সদস্য কাজের আগেই তাকে ঘুষ দেবে তাকে তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতি বানিয়ে কাজ করান। আমি এর প্রতিবাদ করায় ইউনিয়নের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। এ বিষয়ে ৬নং তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেনের বলেন, কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে। তদন্তপূর্বক তা দেখা যাবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com