ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই, বিশ্ব হায়েনা ইসরাইলের নৃশংসতা রুখে দিতে বিশ্বমুসলিমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মুসলমান রাষ্ট্রগুলো এগিয়ে এলে বিশ্বসন্ত্রাসী জারজরাষ্ট্র ইসরাইল এক মুহূর্তও টিকবে না। মাহে রমজানেও ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানরা নামাজ, তারাবীহ পড়তে পারছেন না এবং ইফতার ও সাহরী বিহীন রোজা রেখে মানবতার জীবন যাপন করছে। খাদ্যের জন্য লাইনে দাঁড়ানো অসহায় ফিলিস্তিনিদের নির্মমভাবে হত্যা করছে।
তিনি বলেন, আমেরিকা ও ভারতের মদদে ইসরাইলী হায়েনারা পুরো গাজাকে জেলখানায় রূপ দিয়ে তাদেরকে তিলে তিলে হত্যা করছে। জাতিসংঘ ইসরাইলীদের বর্বরতাকে দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য আমাদের দাবি হলো বর্তমান জাতিসংঘকে বাদ দিয়ে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্রগলোর সমন্বয়ে একটি জাতিসংঘ গড়ে তুলতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, রোজাদার নিরীহ নিরাপরাধ ফিলিস্তিনের মা-বোনদের, শিশু ও পুরুষদের হত্যা করেই যাচ্ছে। এর প্রতিকার হওয়া উচিত। এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর কেরাণীগঞ্জের একটি মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা শাখার উদ্যোগে ইসলামী সমাজ গঠনে মাহে রমজানের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা মো. আরিফুল ইসলাম, ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি আলহাজ্ব হাফেজ মো. জয়নুল আবেদীন , সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম। সংগঠনের কেরাণীগঞ্জ দক্ষিণ থানা সভাপতি আলহাজ্ব সুলতান আহমদ খানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মুফতি মোঃ আলমগীর হোসাইনের স ালনায় অনুষ্ঠিত ইফতার পূর্ব আলোচনায় ঢাকা জেলা ও কেরাণীগঞ্জ থানা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের সামগ্রিক অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। ইসলাম ও ইসলামী তাহজীব-তামাদ্দুনের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট-ভিত্তিক অপপ্রচার চলছে। ঢাবিসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইসলামী সংস্কৃতি বিদায় করে ভিনদেশি সংস্কৃতির আমদানি করা হচ্ছে। বিদেশী কালচারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রমোট করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার ও কোরআনের ক্লাস নিষেধ হলেও সেখানে হোলি খেলার নামে নষ্টামি হতে কোন সমস্যা হয় না। হোলি খেলার নামে নারী-পুরুষদের নষ্টামি এটা কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আওতায় পড়ে না। যদি কোন বিশেষ ধর্মের অনুষ্ঠান হয়, সেটা ভিন্ন। কিন্তু রাস্তাঘাটে মুসলমানদেরকে রং মাখিয়ে, গায়ে হাত দিয়ে অসভ্যতা মেনে নেয়ার মতো নয়।
পীর সাহেব আরও বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে রমজানের-মতো পবিত্রতম সময়ে অভিশপ্ত সমকামীদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান আড়ংয়ের দুঃসাহস সমকামীদের প্রতীক পাঞ্জাবি, ড্রেসে ব্যবহার করে বাজারজাত করছে। আসলেই ব্রাক বা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোয় এদেশে সমকামীতাকে প্রামোট করছে এবং মা-বোনদের পর্দা-হীন জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। তিনি আড়ংয়ের বাড়াবাড়ি বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। লেখাপড়ার পরিবেশ বজায় রাখতে হবে এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনকে কাজ করতে হবে। তিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, যানজট-মুক্ত এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদানে সরকার ব্যর্থ। ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপক চাঁদাবাজি বন্ধ এবং ঘরমুখো মানুষ যেন নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।