প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব পরমাণু সংস্থা (রোসাটম) ডিজি অ্যালেক্সি লিখাচেভ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুতের আরও দুটি ইউনিট স্থাপনে সম্মত হয় তারা।
গতকাল মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব পরমাণু সংস্থা (রোসাটম) ডিজি অ্যালেক্সি লিখাচেভ। এ সময় রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুতের আরও দুটি ইউনিট স্থাপনে সম্মত হয় বাংলাদেশ-রাশিয়া। ১ম ও ২য় ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হলেই শুরু হবে, নতুন প্ল্যান্টের নির্মাণকাজ বলে জানানো হয়। বৈঠক শেষে আরও জানানো হয়, চলতি বছরের মধ্যেই ফিজিক্যাল স্টার্টআপ (পরীক্ষামূলক চালু) সম্পন্ন হবে এবং বিদ্যুৎ মিলবে ২০২৫ সালেই।
এর আগে ১১ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথমটির কাজ চলছে। আমরা চেয়েছিলাম দক্ষিণবঙ্গে দ্বিতীয়টি করতে। কিন্তু সেখানকার মাটি অনেক নরম। সে কারণে পাবনাতেই করার পরিকল্পনা চলছে। প্রথমটির সঙ্গে এটার কাজও যাতে শুরু করতে পারি, সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে। দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প পাবনার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। চলতি বছরের শেষ নাগাদ রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হতে যাচ্ছে। আর ২০২৫ সালের মধ্যেই চালু হবে পুরো কেন্দ্র। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জটিল এই প্রকল্প বাস্তবায়নে নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় বলছে, পারমাণবিক জ্বালানি আমদানির পর এখন কমিশনিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে মেগা এই পাওয়ার প্ল্যান্টটি। নির্মাতা দেশ রাশিয়াও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে প্রকল্পটি বুঝিয়ে দিতে পূর্ণ নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
জানা যায়, রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মাণাধীন এই প্রকল্পটিতে ভিভিইআর প্রযুক্তির তৃতীয় প্রজন্মের রিঅ্যাক্টর বা পরমাণু চুল্লি ব্যবহৃত হচ্ছে। যার প্রত্যেকটির উৎপাদন সক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট করে।
পারমাণবিক জ্বালানি বাংলাদেশে আনার প্রক্রিয়া গত বছর সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ শুরু হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু সংস্থা রোসাটমের তত্ত্বাবধানে সাতটি ধাপে ১৬৮টি ইউরেনিয়ামের অ্যাসেম্বলি পৌঁছে গেছে রূপপুরের প্রকল্প এলাকায়। এখন পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর জ্বালানি লোডিংয়ের প্রস্তুতি চলছে।
প্রকল্প এলাকায় সময় সংবাদের সঙ্গে কথা হয় রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু সংস্থা রোসাটমের মহাব্যবস্থাপক অ্যালেক্সি লিখাচেভের সঙ্গে। তিনি জানান, বিড়ম্বনার অনেক ধাপ পেরিয়ে প্রকল্পটি এখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে। স্পর্শকাতর এমন স্থাপনায় জটিল পরিস্থিতি কীভাবে এড়াবে বাংলাদেশ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কোনো চ্যালেঞ্জেই রূপপুর ছেড়ে যাবে না রাশিয়ার একজন কর্মীও।