গত ১৫ই মার্চ, (শুক্রবার) শিক্ষক-সহপাঠীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তাৎক্ষণিক গঠিত তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও ১৭ দিনেও জমা দেওয়া হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন। তবে তদন্ত কমিটির দাবি প্রতিবেদন কবে জমা দিতে হবে তার স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
এদিকে গত শনিবার, (১৬ মার্চ) মধ্যরাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। উপাচার্য বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি তদন্ত কমিটি সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। তাছাড়া এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে ঘটা ঘটনারও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। আর আমার হাতে যত আইন আছে, সব আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করবো।’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, এর আগেও বিভিন্ন ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। আজ পর্যন্ত সেসব তদন্তের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। তারা তদন্ত সাপেক্ষে অতিদ্রুত দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোর সাম্য বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের সব আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে প্রশাসন যদি আমাদের আন্দোলন হালকাভাবে নেয়, তাহলে পরের আন্দোলনগুলো শান্তিপূর্ণ থাকবে না। ক্যাম্পাস এখন অফিসিয়ালি বন্ধ তাই প্রশাসন সুবিধাটি পেয়ে গেছে? ঈদের পরেই প্রশাসনকে আমাদের মুখোমুখি হতে হবে এবং ছাত্ররা আরও কঠোর হবে?’ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, আমরা যখন উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিই তখন তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল তদন্তের বিষয়গুলো একটা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যায়, তাই একটু সময় লাগতে পারে। আর এখন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আন্দোলন করাও সম্ভব নয়। আমরা দেখবো এই বন্ধের ভেতরে প্রশাসন কতটুকু কাজ করে? প্রশাসনের ঢিলেমি থাকলে আমরা ক্যাম্পাস খুললে আবারও আন্দোলন করবো? তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা এখনও কাজ শেষ করতে পারিনি। তবে প্রতিদিনই এটা নিয়ে বসছি। এর আগে বর্তমান ও সাবেক প্রক্টর, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান, তৎকালীন প্রভোস্ট ও একজন হাউজ টিউটরের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। নতুন কিছু তথ্যের জন্য তাদের পুনরায় ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, সাত দিনের ভেতরে রিপোর্ট দিলে সেই রিপোর্ট অত্যন্ত কাঁচা হয়। যেহেতু রিপোর্টের কাজ চলছে, আমাদের শিক্ষকরা কেউ বসে নেই? তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অন্য সদস্যদের নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করছেন। ইতোমধ্যে কয়েকবার কুমিল্লাতেও গিয়েছেন তারা? আশা করছি ঈদের পরপরই আমরা রিপোর্ট হাতে পাবো।