রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
খেলাধুলার মাধ্যমে মাদককে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে-মাফরুজা সুলতানা মাইলস্টোন কলেজে নবম শ্রেণির বালিকাদের অংশগ্রহণে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ  ‘বিবেচনায় রয়েছে’: বদিউল আলম ১৬ বছর বঞ্চিতদের এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বইমেলয় স্টল বরাদ্দের দাবি ইসির অগাধ ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগে সমস্যা ছিল: বদিউল আলম আমাদের শিক্ষা কর্মসংস্থান খোঁজার মানুষ তৈরি করছে, যা ত্রুটিপূর্ণ: প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিন: ‘স্থানীয়দের জীবিকা বনাম পরিবেশ রক্ষা’ আ. লীগ-জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে কফিন মিছিল ১৫ বছরের জঞ্জাল সাফ করতে সময় লাগবে: মির্জা ফখরুল

সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ইফতার ও দোয়া মাহফিলে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪

গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ১ম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর রমজান মাস হওয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ইফতার ও দোয়া মাহফিলে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের ব্যাপক দৌড়ঝাপ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর পাশাপাশি মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি ও জামায়াত নেতারাও। সবাই এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় ইফতার ও দোয়া মাহফিল করে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জানান দিতে। ক্ষতাসীন দল আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে গণসংযোগসহ প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক সুনন্দন দাস রতন এবং উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও দেওপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দীন সোহেল। অপরদিকে, এ সরকারের অধীনে সকল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার মধ্যে ভোটের মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ বিরোধী জোটের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যেই চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ভোটের মাঠে প্রচারে নেমেছেন তারা। যাদের মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান খান মার্কনী। তিনি রাজশাহী জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা। এছাড়াও জামায়াতে ইসলাম থেকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করার ঘোষণা দিয়ে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন রাজশাহী জেলা পশ্চিম জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাজশাহী জেলা পশ্চিম জামায়াতে সহ-সেক্রেটারী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান। তিনি ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপি জামায়াত এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণায় অনড় থাকলেও ভেতর ভেতর জামায়াতেরে নেতাকর্মীরা নিজেদের সিদ্ধান্তে কৌশল নিয়ে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হচ্ছে। ভেতর ভেতর জামায়াত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার জন্য প্রার্থীতা ঘোষনা দিয়ে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হওয়ায় রাজনৈতীক বিশ্লেষকরা এটা জামায়াতের কৌশল হিসাবে মনে করছে। তবে বিএনপির উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা বলছে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। যদি কেউ প্রার্থী হয় তাহলে তাকে বয়কট করবে বিএনপির নেতা কর্মিরা। গোদাগাড়ী উপজেলার বিএনপির নেতা কর্মিরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বাইরে নয়। বিএনপির নেতা কর্মিরা ভোটাধীকার ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এদিকে গোদাগাড়ী উপজেলার সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দিনরাত ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচার প্রচারণার অংশ হিসাবে প্রাথীরা প্রতিদিনই উপজেলার ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ইফতার ও দোয়া মাহফিল করে ভোটার সমর্থকদের মন জয় করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে প্রার্থী সুনন্দন দাস রতন হিন্দু সম্প্রদায়ের হওয়ায় তিনি কোন অংশে থেমে নাই রমজান মাসেও প্রচার প্রচারনা চালাতে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পুজা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি তাকেও ইফতার মাহফিলে অংশ গ্রহন ও ইফতার মহফিলে সহযোগিতা করতে দেখা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এই রমজান মাসে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনার বড় অংশ হয়ে দাড়িয়েছে ইফতার ও দোয়া মাহফিল। রাজনৈতীক দল গুলোর ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হলেও আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের এই ইফতার ও দোয়া মাহফিল হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারনার মূল কেন্দ্র বিন্দু। তবে বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল গুলোতে নির্বান বিরোধী বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে। যে সকল সাম্ভাব্য প্রার্থীরা দিনরাত ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, রবিউল আলম, বেলাল উদ্দীন সোহেল ও সুনন্দন দাস রতনকে মাঠে বেশী সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে পরিষদের দায়িত্ব নেওয়ার পর স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভার্টসহ সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। এসব উন্নয়নের বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সহযোগিতায় করেছি। আগামী দিনে এই উন্নয়ন চলমান ও বাকি কাজ সমাপ্ত করার কথা বলছেন তিনি। চেয়ারম্যান প্রার্থী গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল আলম ভোটারদের নিকট স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও স্মার্ট উপজেলা পরিষদ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। সব কিছুর উর্ধ্বে থেকে সত্যিকার অর্থে যেমন উন্নয়ন করা প্রয়োজন সেটি করে দেখাতে চাই। নির্বাচতি হয়ে যাওয়ার পরও জনগনের নিকট এসে দেখা সাক্ষাত ও জবাব দিহিতার কথাও জানান তিনি। চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলাল উদ্দীন সোহেল ভোটারদের নিকট গিয়ে সকল লোভ ও ক্ষমতার অর্থবৃত্তায়নের দুরে থেকে দেশ, মাটি ও মানুষের কল্যাণ ও দেশের উন্নয়নের জন্য গোদাগাড়ী উপজেলাকে সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে স্মার্ট উপজেলা পরিষদ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার চাওয়া পাওয়ার কিছুই নাই। আমি ৭নং দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে থেকেই ইউনিয়নবাসীর সেবা করছি। এখন উপজেলাবাসীর সেবা করতে চাই। জনসেবার নামে ব্যবসা করতে চাই না। জনগণ আমাকেই ভোট দিবে বলে মনে করেন তিনি। চেয়ারম্যান প্রার্থী সুনন্দন দাস রতন ভোটারদের নিকট গিয়ে জনগনের সেবা করার পাশাপাশি দালাল মুক্ত, স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও স্মার্ট উপজেলা পরিষদ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়ন, সমাজ সেবা, শিক্ষা, ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সহযোগিতাসহ দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি এবং ৩ বছর থেকে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় আছি। মাঠে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও সারা পাচ্ছি। এদিকে, জেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান খান বলেন, বারবার নির্বাচনের মাঠ থেকে বিএনপি সরে থাকায় বিএনপির তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। আমার মূল উদ্দেশ্যে বিএনপির কর্মীদের পাশে থেকে তাদের মনোবল বাড়ানো। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি বা জেলা বিএনপির নেতারা কে কি ভাবলো সেটা দেখলে হবে না। আমরা এই রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছি। এভাবে নির্বাচন থেকে সরে থাকলে নেতাকর্মীরা হারিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে বিএনপির সাধারণ কর্মী ও সমর্থকদের ভোটের মাঠে নামার কথা জানান দিয়েছি বলে জানান বিএনপির এই নেতা। চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজশাহী জেলা পশ্চিম জামায়তের আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক বলেন, কেন্দ্রীয় ভাবে নির্বাচনের কোন নির্দেশনা আমাদের দেওয়া হয়নি। যেহেতু এটা স্থানীয় নির্বাচন তাই স্থানীয় ভাবেই আমরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমরা মাঠ পর্যায়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছি। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার পর পরিস্থিতি কেমন তৈরী হয় তা দেখার বিষয়। তবে ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীরা শঙ্কিত আছেন যে এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ট ভাবে হয়নি, সেই ক্ষেত্রে এই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়তো হবে না। মাঠে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও সারা পেলেও আমরা আরো পর্যবেক্ষন করছি দেখা যাক সর্বশেষ কি অবস্থা দাঁড়ায়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com