মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

সকল দুঃখ ভুলে জীবন হবে আরও বেশি প্রশান্তিময়

প্রভাষক সুশীল চাকমা
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

মন্তব্য প্রতিবেদন
উত্থান হলে পতন হতে হবে তা যেমনি চিরাচরিত সত্য তেমনি আমাদেরকেও কোন এক বিশেষ মুহুর্তে মৃত্যু স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এটা চিরায়ত। অনিত্যের প্রতিধ্বনিতে প্রকৃতি যেন হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠছে। চারিদিকে একটু অবলোকন করলে বুঝা যায় প্রকৃতির সেই কান্নার নীরব ভাষার প্রলাপ। সব যেন সময়ের এক অমোঘ চিত্রায়ন। সময়ের কাছে আমরা কতো অসহায় তা ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায়। পৃথিবীতে বহু বীর, মহাজ্ঞানী, ক্ষমতাধর রাজা-সম্রাট আর সাম্রাজ্যের যেমন উত্থান হয়েছে তেমনি কালের পরিক্রমায় পতনও হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়-মৌর্য, গুপ্ত, গৌর, পাল, সেন ও মোগল সম্রাজ্যসহ নাম না জানা বহু সম্রাজ্যের কথা। এসব রাজা এবং সম্রাটরা ছিলেন যার যার সময়ে প্রবল দাপুটে যারা পুরো ভারতবর্ষকে বীরদর্পে দাপিয়ে শাসন করেছেন। সকলেই হাজারো বর্ষ বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন কিন্তু স্থায়ীভাবে কেউ টিকে থাকতে পারেনি। কালের পরিক্রমায় ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তাদের গড়ে তোলা সৌখিন স্থাপনা আর দালানকোঠা। ধরা যাক মৌর্যদের কথাই। প্রাচীন ভারতে লৌহ যুগের প্রথম ও সবচেয়ে বড় সম্রাজ্য-মৌর্য। অশোক মৌর্য ছিলেন এই সম্রাজ্যের তৃতীয় ও প্রবল প্রভাবশালী সম্রাট যাকে ভারতবর্ষের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাট হিসেবে বলা হতো মহামতি অশোক। সর্বভারতীয় সম্রাট খ্যাত অশোকের একটি আদেশ প্রতিপালনের জন্য প্রস্তুত থাকতেন লক্ষ কোটি মানুষ অথচ কালের পরিক্রমায় তাকেও অনিত্যতাকে গ্রহণ করতে হয়েছে। আজ মহাপরাক্রমশালী, মহামতি অশোক নেই কিন্তু পড়ে আছে তার স্মৃতি। ভারতবর্ষের আনাচে-কানাচে কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে তার সৃষ্টি করা স্থাপত্য আর দালানকোঠা এবং অসংখ্য কর্ম। এসব সৃষ্টির পরতে পরতে লুকানো আছে কতশত সুখ, দুঃখ আর বেদনাদায়ক ও বেদনাবিধুর স্মৃতি। অতীতের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা প্রকৃত মানুষ হিসেবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো এই শোভন আশা এবং কামনা করি।
কালের পরিক্রমায় আজ আমরা স্পর্শ করেছি ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। পালন করা হয়েছে বৈশাখ সংক্রান্তি। মূলত: পালি ‘সঙ্কন্ত’ থেকে সংক্রান্ত হয়েছে। ঋতু পরিবর্তনের সংক্রান্তিতে নতুন বছর আগমনে পুরান বছরটি আপনিতে গত হয়ে যায়। ‘সঙ্কন্ত’, সংক্রান্ত, বিঝু নববর্ষ নামক কথার মতো যেন উত্তম অর্থবহ হয়ে উঠে সেই জন্য লোভকে দানের দ্বারা, দোষ বা দ্বেষÑহিংসাকে মৈত্রীর দ্বারা, অবিদ্যা মোহকে প্রজ্ঞার দ্বারা পরিবর্তন করে নিতে পারলে তবেই সেটি হবে প্রকৃত চৈত্র সংক্রান্তি। আমাদের চিরচেনা বিঝু বা নবর্বষ। বছরে একবার পরিবর্তন নয়, সঙ্খত বা সংস্কৃত রূপ-নাম সমূহ প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে ক্ষয়ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্খত বা সংস্কৃত ধর্মকে মুহুর্ত উপলব্ধির করতে পারলে মানব জীবনের শত দুঃখের মাঝেও পরম সুখ এবং শান্তি লাভ হবে। পৃথিবীর সমস্ত মানব নিজেকে ভালো কাজের দ্বারা পরিবর্তন করার সক্ষম হোক। নতুন বছর আগমনের মাঝে পুরনো বছরের সমস্ত অশুভ গ্লানি ধুয়ে মুছে যাক। ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সবার জন্য মঙ্গলময় হয়ে উঠুক, জীবন হোক প্রশান্তিময়।
লেখক পরিচিতি:
প্রভাষক সুশীল চাকমা
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ।
মিরপুর-১৩, ঢাকা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com