সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেছেন, ‘এই স্বাধীনতা দিবসেও ভারত আমাদেরকে দিয়েছে দুইজনের লাশ। মুক্তিযুদ্ধে ভারত যেভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে তাতে আজকের ভারত হটাও আন্দোলন অভাবনীয়। কিন্তু ভারত তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে বিশেষ করে বাংলাদেশের সাথে যে ব্যবহার করে আসছে, তাতে এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা পরিষ্কার হয়ে যায়। এটাও মনে হচ্ছে যে, বাংলাদেশ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।’
সীমান্ত হত্যা ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবিতে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা সোমবার (২২ এপ্রিল) অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। লন্ডনের টেম্পল এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ আহ্বান করে লন্ডনের কমিউনিটি ভিত্তিক ২১টি মানবাধিকার সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম গ্লোবাল বাংলাদেশিজ অ্যালায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস (জিবিএএইচআর)। সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।
এছাড়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব ও ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলনের উদ্যোক্তা ড. পিনাকী ভট্টাচার্য এবং গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন জিবিএএইচআর আহ্বায়ক ও লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক শামসুল আলম লিটন। স ালনা করেন লেখক রাকেশ রহমান ও সংগঠনের সিনিয়র ফেলো রুপম রাজ্জাক।
সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবিতে সমাবেশকারীরা ভারতের হাইকমিশনের মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করেন।
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নুরুল হক নুর বলেন, ‘বাংলাদেশের নিপীড়িত মানুষ তার রক্তাক্ত সীমান্ত, অধিকৃত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতেও প্রস্তুত।’
ভারতকে দায়িত্বশীল ভূমিকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু পণ্য বর্জন নয়, ভারতের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে ইন্ডিয়া আউট কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে শামসুল আলম লিটন বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করা হচ্ছে।’ সমাবেশের স ালক লেখক রাকেশ রহমান বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা ভারতীয় আগ্রাসন মেনে নিতে পারি না। শুধু ভারতীয় পণ্য বর্জন নয়, প্রকৃত স্বাধিকারের দাবিতে তীব্র প্রতিরোধ-সংগ্রামের জন্য বাংলাদেশের ঘরে ঘরে জনগণ নীরবে প্রস্তুত হচ্ছে।’
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র ফেলো ও সিনিয়র ড্যাটা ইঞ্জিনিয়ার রুপম রাজ্জাক, ব্যারিস্টার জাকির হাসান, টিভি সাংবাদিক শেখ মুহিতুল রহমান বাবলু, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই-এর মুসলিম খান, ফাইট ফর রাইট ইন্টারন্যাশনালের বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, মহিলা নেত্রী অঞ্জনা আলম, তাসলিমা তাজ, জাহানারা আক্তার শিমলা, মানবাধিকার সংগঠন ইআরআই সম্পাদক নওশিন মুস্তারি মিয়া, অ্যাডভোকেট সুফিয়া পারভীন, সাংবাদিক মিনহাজুল আলম মামুন, তোবারক হোসেন, মিশুক হোসেন, হাসনাত আরিয়ান খান প্রমুখ।