যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহস্পতিবার ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ডেকেছিল। এর ফলে হাতাহাতি হয় এবং কয়েক ডজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এ দিকে, অন্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষ হবার অপেক্ষায় আছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমেস্টার শেষ হতে চলেছে এবং কিছু দিন পরই সমাবর্তন অনুষ্ঠান হবার কথা। বস্টন পুলিশ বলেছে, ‘বস্টনের এমার্সন কলেজে রাতের মধ্যে ধর্না-শিবির থেকে ১০৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং চারজন পুলিশ আহত হয়েছেন। তবে এই আঘাত প্রাণঘাতী নয়।’ লস অ্যাঞ্জেলিস পুলিশ দফতর বলেছে, সাউদার্ন ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভ চলাকালে বুধবার রাতে আরো ৯৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইসরাইলের সাথে আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করুক এবং কয়েক মাসব্যাপী সঙ্ঘাতে সাহায্য করছে এমন সংস্থা থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিক।
কিছু ইহুদি শিক্ষার্থী বলছেন, ‘এই বিক্ষোভ ইহুদি-বিদ্বেষের রূপ নিয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন এগিয়ে এসেছে, অথচ তারা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পা রাখতে ভয় পাচ্ছেন। বিক্ষোভ দমনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠোর পদক্ষেপের পেছনে ইহুদি শিক্ষার্থীদের ভয় আংশিক ভূমিকা পালন করেছে।’ নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা হুমকি উপেক্ষা করে ছাউনি খাঁটিয়েছে। এই জায়গায় কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী তাদের পরিবারের সামনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে চলেছেন। ছাউনি সরিয়ে নেয়ার জন্য কয়েকবার ব্যর্থ চেষ্টার পরেও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে বোঝাপড়া অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে ১০০ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইউএসসি-তে উত্তেজনা ইতোমধ্যেই চরমে। নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে এই বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনপন্থী ভ্যালিডিক্টোরিয়ানের পূর্বপরিকল্পিত সূচনা-ভাষণ বাতিল করার পর এই উত্তেজনা। গত বুধবার সকালে পুলিশের সাথে হাতাহাতির পর কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী মানববন্ধন তৈরি করেছিল। সন্ধ্যায় তাদের এক এক করে আটক করা হয়েছে। গত বুধবার সকালে অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা আগ্রাসীভাবে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। কয়েক শ’ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পুলিশ (কিছু ঘোড়সওয়ার পুলিশের হাতে ছিল ডা-া) বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ঢুকে পড়ে। জননিরাপত্তা বিষয়ক কেন্দ্রীয় দফতর জানিয়েছে, ‘পুলিশ অফিসাররা ভিড়ের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে যান এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবটের নির্দেশে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেন।’ ডেন উরকুহার্ট টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি এই পুলিশি উপস্থিতি ও গ্রেফতারিকে ‘অতি-প্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তারা যদি বাহিনী নিয়ে না আসতেন তাহলে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকতো।’১৫ উরকুহার্ট আরো বলেন, ‘এই সমস্ত গ্রেফতারির কারণে আমার মনে হয় আরও বিক্ষোভ হতে চলেছে।’ সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা