বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বরিশালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্বোধন শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ ফটিকছড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত ও অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরী কিশোরগঞ্জে শহীদ পরিবারের জায়গাজমি জবরদখল বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ নিরাপদ সড়ক চাই দাউদকান্দি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা টমেটো চাষে কৃষক ফিরোজের বাজিমাত, ঝুঁকছেন অন্য কৃষকরাও দাউদকান্দিতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেফতার তৃতীয় দিনের মতো চলছে সুন্দরবনের আগুন নেভানোর কাজ বাড়ির ভিতর স্বল্প পরিসরে মাছচাষে তিনগুণ লাভে খুশি মাছচাষী শরীয়তপুর সদর উপজেলাকে একটি আধুনিক উন্নত মডেল রূপে গড়ে তুলবো-উজ্জ্বল আকন্দ

নির্বাচনের সময় জাপায় কী হয়েছিল, জানাবেন জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জাতীয় পার্টিতে কী হয়েছিল— তা জানাবেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নানামুখী সমালোচনামূলক কর্মকা-ের বিষয়ে নেতাকর্মীদের সবিস্তারে ব্যাখ্যা করবেন বিরোধীদলীয় এই নেতা। শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে (রমনা) অনুষ্ঠেয় দলের কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় নেতাকর্মীদের ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নিয়েও নির্দেশনা দেবেন জিএম কাদের। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের আগেও বর্ধিত সভা করেছিলাম। এখন আবার করছি। আমাদের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় অনেকগুলো বিষয় আলোচনা করেছিলেন। সেসব বিষয়ে আলোচনা হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দল নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছিল, সেগুলো সম্পর্কে কথা বলবো।’ ‘কী হয়েছিল, সামনে কী হবে, আমাদের কী করণীয়’ এসব নিয়ে আলোচনা হবে বর্ধিত সভায়, জানান জিএম কাদের। বিগত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির মনোনয়নবঞ্চিতদের দাবি ছিল, সরকারের সঙ্গে ‘সম্পর্ক করেই’ বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হয়েছেন জিএম কাদের। আসন নিয়েও সমঝোতা করেছিলেন জাপা চেয়ারম্যান। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রওশন এরশাদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জিএম কাদেরকে উদ্দেশ করে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘এমন একজন আছেন, যার কাছে দলের চেয়ে বউ বড়’। অবশ্য এমন বক্তব্যের পরই দল থেকে বহিষ্কার হন বাবলা।
সর্বশেষ গত ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির চিফ প্যাট্টন রওশন এরশাদের নেতৃত্বে আরেকটি অংশের সূচনা হয়। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত সেই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি প্রথমবারের ভাঙনের মুখে পড়ে। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত জাপায় এ নিয়ে অন্তত ছয় বার বিভক্তি হয়েছে।
আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে-পরে দল নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নির্বাচনের সময় অনেক কিছু হয়েছে। সেগুলো আমরা ইভালুয়েশন করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবো।’ আজ শনিবার বর্ধিত সভায় নেতাকর্মীদের মতামত শুনে তাদের উদ্দেশে আগামী দিনের করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেবেন জিএম কাদের। বিরোধীদলীয় নেতা মনে করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা করছেন, তা ওয়ান পার্টির চর্চা। এভাবে চলতে থাকলে দেশে কোনও রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব থাকবে না। এতে করে দেশে চরমপন্থার উত্থান হবে। আমি সংসদেও বলেছি, এখন যেভাবে ওয়ান পার্টি রুল চলছে, তাতে জাতীয় পার্টি, বিএনপি কেউ থাকবে না।’
‘শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের রাজনীতিও থাকবে না’— যোগ করেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক রাজনীতি না থাকলে কোনও দলই টিকবে না। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চরিত্রও থাকবে না। অস্বাভাবিক রাজনীতির উত্থান হবে।’ চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, ‘এখন তো জয় হয় শুধু একজনের। সাধারণ মানুষের নির্বাচনের উপর থেকে আস্থা কমে যাচ্ছে। এজন্য অনেকে অগ্রসর হয়েও আবার পিছিয়ে গেছেন। উপজেলা নির্বাচনে সীমিত পরিসরে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা রয়েছেন।’
বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়ে উল্লেখ করেন, ‘তবুও আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। দেখতে চাই সরকার কোনও পরিবর্তন করে কিনা। এটুকু আশা তো থাকতেই হয়। আশা ছাড়া তো মানুষ বাঁচতে পারে না।’ উল্লেখ্য, বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী জানিয়েছেন, শনিবার অনুষ্ঠেয় বর্ধিত সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপির পরিচালনায় কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা।
চলমান ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে হাতে গোনা চার-পাঁচটি ছাড়া কোনও দল স্থানীয় সরকার পরিষদের এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। দলীয়ভাবে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টির অংশগ্রহণের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব দলের অংশগ্রহণও একেবারে সীমিত পরিসরে। শুধু সাংগঠনিকভাবে কিছুটা অবস্থান রয়েছে—এমন এলাকায় তারা প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও অনুসারীরা স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করছেন নির্বাচনে। পাশাপাশি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত জানালেও বিএনপির কিছু নেতাকর্মী ও অনুসারী নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। আলাপকালে রাজনৈতিক দলের নেতারা জানান, যেসব রাজনৈতিক দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, সেসব দল ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেনি। সরকারের ঘনিষ্ঠ ও নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাত ছিল—এমন দলগুলোও অংশগ্রহণ করেনি।
উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে বিএনপি, এলডিপি, সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জেএসডি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, গণফোরাম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপসহ আরও বেশ কয়েকটি দল। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি অংশ নিয়েছিল। বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও এ দলগুলো নির্বাচন থেকে বিরত রয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বলা হয়—শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের প্রকাশ্য একপেশে ভূমিকার জন্য এর আগে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। এখনও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। বিদ্যমান ‘অরাজক পরিস্থিতি’ আরও অবনতিশীল হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। জানতে চাইলে এলডিপি নেতা সালাহউদ্দিন রাজ্জাক জানান, এলডিপির কোনও নেতা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করেছে এলডিপি। প্রশ্নের জবাবে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না।’ ইসলামী আন্দোলনের নেতা আহমদ আবদুল কাইয়ূম এ প্রতিবেদককে জানান, বিগত উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও এবার নির্বাচন বর্জন করছে ইসলামী আন্দোলন। তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন বর্জন করছে ইসলামী আন্দোলন।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন বর্জন ও অনুসারীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিলেও উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্বে অন্তত ৩৮ জন অংশগ্রহণ করছেন চেয়ারম্যান পদে। এদের মধ্যে অন্তত ১৮ জন নেতা দলীয় পদে রয়েছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে শোকজ ও বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে দু-একজন অংশগ্রহণ করলেও বিরোধী অন্য কোনও দলই বহিষ্কারের পথে যাচ্ছে না। খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচনে এত মনোযোগ দিচ্ছি না। দলীয়ভাবে খেলাফত মজলিস উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। দু-একজন বিচ্ছিন্নভাবে অংশগ্রহণ করলেও এগুলো গুরুত্ব দিচ্ছি না।’
‘জামানত বৃদ্ধি অনাগ্রহের কারণ’: সম্প্রতি স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদের জামানত ১০ গুণ বৃদ্ধি করে এক লাখ ও পঁচাত্তর হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে উল্লেখ করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামানত হিসেবে নতুন নিয়মের কারণে প্রার্থী ও দলগুলোর মধ্যে অনাগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে বেশি। এ বিষয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি না। আমাদের পার্টির কেউ অংশ নিতে পারেনি। উপজেলায় কেউ অংশ নেয়নি। গণতন্ত্র মঞ্চেরও কোনও শরিক দল অংশ নেয়নি।’
উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের নতুন জামানতের নিয়মের বিষয়ে সাইফুল হক বলেন, ‘এটা একটা বড় কারণ অংশগ্রহণ না করার। চূড়ান্ত স্বেচ্ছাচারিতা করে জামানত দশগুণ বাড়ানো হয়েছে। এখানে রাজনীতিমনস্ক ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। লুটেরা মাফিয়াদের সুযোগ দিতেই এই নিয়ম করা হয়েছে, এভাবে বাড়ানো হয়েছে। এটা বাতিল করতে হবে।’ বিগত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল তৃণমূল বিএনপি। নতুন নিবন্ধিত এই দলটিও উপজেলা নির্বাচনে কোনও প্রার্থী দেয়নি। দলের মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘আমাদের একটা ইয়ে ছিল, যেহেতু এমপি নির্বাচন করেছি। উপজেলা নির্বাচনও করতে চাইছিলাম।’ ‘কিন্তু যেভাবে এক লাখ টাকা জামানত এবং নির্বাচনের পরিবেশ—তাতে ইন্টারেস্ট ফিল করি না’, বলেন তৈমুর আলম। তিনি বলেন, ‘আমি এখন লন্ডনে আছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো লন্ডন থেকে ফেরার পর দলের বৈঠক করে—চেয়ারম্যান, নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এত টাকা কে দেবে। শুধু সরকারি দলের লোকেরা পারবে এত টাকা দিয়ে নির্বাচন করতে। মূলত সাধারণ মানুষ যেন নির্বাচনে আসতে না পারে, সেজন্যই লাখ টাকা জামানত করা হয়েছে’ বলে দাবি করেন তৈমুর আলম খন্দকার। সরকার সমর্থক দলগুলোর মধ্যেও উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণে তেমন সাড়া নেই। দলীয় প্রতীকে কোনও প্রার্থী দেয়নি এই দলগুলো। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, গণফ্রন্ট ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি। কোনও কোনও দলের সূত্র দাবি করেছে, বিগত জাতীয় নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সহযোগিতা না পাওয়ায় চলমান উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছে বেশ কয়েকটি দল। ইসলামী ঐক্যজোটের প্রচার সচিব আনছারুল হক ইমরান বলেন, ‘আমরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি না। বিক্ষিপ্তভাবে এক-দুজন হয়তো স্বতন্ত্র পরিচয়ে প্রার্থিতা করছে।’ জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার বলেন, ‘ঠিক ওইভাবে না। আমরা উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দুই দফায় কোনও প্রার্থী দেইনি। দুয়েক জায়গায় দিতে পারি পরের পর্বগুলোতে, তখন জানাবো।’
এই দলগুলোর অন্যতম ১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন। দলটির মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী বলেন, ‘যেহেতু এই নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না, সবাই সবার মতো করছে। আওয়ামী লীগও দলীয় প্রতীক দেয়নি। এ জন্য আমাদের যেসব প্রার্থী আছেন, তারা তাদের মতো করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী চার-পাঁচ জন আছে।’
অংশগ্রহণ না করার কারণ সম্পর্কে রেজাউল হক বলেন, ‘আমরা আসলে বিগত নির্বাচনে ওইভাবে সহযোগিতা পাইনি। দলগতভাবে ভিন্নভাবে চিন্তা করছি।’ সরকারপন্থি দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি, জেপি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি অংশগ্রহণ করেছে। তবে সাংগঠনিকভাবে যেখানে শক্তিশালী, এমন জায়গা দেখে প্রার্থী দিয়েছে দলগুলো। সরকারপন্থি একটি দলের শীর্ষ নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক যুক্ত করে সরকার। দিনে দিনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক আসলে বিভেদ ও বিভাজন আরও বাড়িয়েছে। রাজনৈতিক কারণেই আবার এবার আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দেয়নি। যে কারণে অন্যান্য দলও প্রতীক নিয়ে আশাবাদী নয়।’ এ বিষয়টির একটি চিত্র উঠে আসে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী তালিকা থেকে। দলটি প্রথম ধাপে ছয় জনকে মনোনীত করে প্রার্থী হিসেবে। এর মধ্যে দুজনই স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
দলের নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন জানান, তারা দ্বিতীয় ধাপের জন্য এখনও ভাবনা-চিন্তা শুরু করেননি। প্রথম ধাপে ছয় জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুই জন করবেন স্বতন্ত্র প্রতীকে। ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাসদ দুই ধাপে তিন জনকে মনোনয়ন দিয়েছে। জাসদের দফতর সম্পাদক সাজাদ হোসেন জানান, চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থিতা করছেন জাসদের। একেএম ছামেদুল হক শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলা, আফজাল হোসেন খান জকি মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলা ও মো. জামাল হোসেন পলাশ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় নির্বাচন করছেন। সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের জন্য এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি জাসদ।’- বাংলা ট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com