জলে-স্থলে যত বিপর্যয়, বালা-মুসিবত, আজাব-গজব আপতিত হয়, এসবই মানুষের হাতের কামাই, কৃতকর্মের ফল। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুণ বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ [সুরা রুম : ৪১] সাইয়িদুনা আলি ইবনু আবি তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন আমার উম্মত ১৫টি অপকর্মে লিপ্ত হবে, তখন তাদের ওপর বিভিন্ন বালা-মুসিবত, আজাব-গজব আসতে শুরু করবে। কাজগুলো হলো :
১. যখন গনিমতের মাল (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করবে, ২. আমানতের সম্পদ পরিণত হবে ব্যক্তিগত সম্পদে, ৩. জাকাত আদায় করাকে জরিমানা মনে করা হবে, ৪. স্বামী স্ত্রীর বাধ্য হবে, ৫. সন্তান মায়ের অবাধ্য হবে, ৬. মা-বাবার পরিবর্তে বন্ধুবান্ধবকে সম্মান করা হবে, ৭. বাবার প্রতি জুলুম করা হবে, ৮. নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের নেতা বানানো হবে, ৯. কোনো ব্যক্তিকে সম্মান করা হবে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য,
১০. মসজিদে উচ্চস্বরে হট্টগোল করা হবে, ১১. পুরুষ লোকেরা রেশমি (সিল্কি) কাপড় পরবে, ১২. প্রকাশ্যে মদপান করা হবে, ১৩. বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা হবে, ১৪. গায়িকা তৈরি হবে। ১৫. উম্মতের পূর্ববর্তী মহামনীষীদের প্রতি অভিসম্পাত করবে পরবর্তীরা এসব কাজ যখন জমিনে শুরু হবে, তখন তোমরা অগ্নিবর্ষী প্রবল ঝড়, ভূমিকম্প ও কদাকৃতিতে রূপান্তরিত হওয়ার অপেক্ষা করবে। [তিরমিজি, আসসুনান : ২২১১]
আজকে আমরা আমাদের সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এর প্রত্যেকটির জঘন্য চর্চা দেখতে পাচ্ছি। সুতরাং আমাদের ওপর আল্লাহর আজাব অনিবার্য হয়ে পড়েছে। এখনো যদি আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্র ইসলামের সুমহান বিধানকে প্রতিষ্ঠা না করি, আল্লাহর অবাধ্যাচারণে লিপ্ত থাকি, তাহলে এরচেয়েও বড় আজাব এসে আমাদের ধ্বংস করে দিতে পারে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের গুরুতর পাপাচারের জন্য লঘুতর শাস্তি দিচ্ছেন, যাতে আমরা ফিরে আসতে পারি আল্লাহর পথে। ফিরে আসার এখনই সময়।