আইপিএল শেষ না হলেও বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের জন্য সেটা শেষ হয়ে গেছে। বুধবার চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে নিজের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন বাঁহাতি এই পেসার। তার পরেও চেন্নাইয়ের জার্সিতে মোস্তাফিজের খেলার অভিজ্ঞতা কাজে আসবে বলে মনে করেন, বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
বুধবার চেন্নাইয়ের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলা মোস্তাফিজ এই মুহূর্তে জসপ্রীত বুমরা ও হার্শাল পাটেলের সঙ্গে সমান ১৪ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় দুই নম্বরে রয়েছেন। যদিও ভারতীয় দুই পেসারের চেয়ে কম ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের এই পেসার। ১০ ম্যাচে ৬.৪০ ইকোনমিতে বুমরার উইকেট ১৪টি। হার্শাল পাটেল ১০ ম্যাচে ১০.২৪ ইকোনমিতে পেয়েছেন সমান ১৪ উইকেট। মোস্তাফিজ অবশ্য ১৪ উইকেট পেতে খেলেছেন ৯ ম্যাচ। গতকাল শেষ ম্যাচে ৪ ওভারে ১ মেডেন দিয়ে ২২ রান খরচ করেছেন। উইকেট না পেলেও বেশ কিপ্টে বোলিং করেছেন তিনি। আইপিএলে বিধ্বংসী সব ব্যাটারদের বিপক্ষে তার পারফরম্যান্স দুর্দান্তই বলা চলে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম তিন ম্যাচে মাঠে নামা হচ্ছে না মোস্তাফিজের। ঢাকায় শেষ দুটি ম্যাচে মাঠে দেখা যেতে পারে এই কাটার মাস্টারকে। আইপিএলে মোস্তাফিজের খেলার অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে দারুণ কাজে দেবে বলে মনে করেন অধিনায়ক শান্ত, ‘অবশ্যই কাজে দেবে। আমার মনে হয় যে ধরনের আবহে ও খেললো, যে টুর্নামেন্ট খেললো অনেক বড় একটা টুর্নামেন্ট। ওখানে ভালো করলে স্বাভাবিকভাবে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। ওখানে আরও বড় বড় ব্যাটারদের বল করেছে। সবথেকে বড় কথা ভালো উইকেটের মধ্যে ভালো বল করেছে। ওই আত্মবিশ্বাস নিয়ে তো আসবে অবশ্যই। এটা যদি এখানেও (জাতীয় দলে) করতে পারে অবশ্যই আমাদের দল দেখা যাবে অনেক এগিয়ে যাবে। ’
এদিকে, মোস্তাফিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিকেএসপির উপদেষ্টা ও ক্রিকেট বিশ্লেষক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। বুধবার চেন্নাইয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ফাহিম বলেছেন, ‘গতকাল (বুধবার) আবারও মোস্তাফিজ দেখিয়ে দিলো কেবলমাত্র স্লোয়ার বা কাটারই নয়, ওর সিম আপ লেন্থ বলগুলো খেলাটা কতটা কঠিন। ওর বোলিংয়ে তিনটি বিষয় চোখে পড়েছে। প্রথমত, ক্রস সিম ডেলিভারির পরিবর্তে সিম আপ ডেলিভারিকে প্রাধান্য দিয়ে বাতাসে অথবা উইকেট থেকে কিছুটা মুভমেন্ট আদায় করে নেওয়া। দ্বিতীয়ত, আগের তুলনায় ওয়াইডিশ ডেলিভারির পরিবর্তে অনেক বেশি উইকেট টু উইকেট বল করা এবং তৃতীয়ত, শর্ট পিচ ডেলিভারি থেকে সরে এসে লেন্থ ডেলিভারি কে প্রাধান্য দেয়া।’
ফাহিম মনে করেন, ভবিষ্যতে মোস্তাফিজকে আরও আক্রমণাত্মক দেখা যাবে, ‘ওর (মোস্তাফিজ) স্টক ডেলিভারিতে একটা বেশ বড় পরিবর্তন এসেছে এবং সেটি ওর বলিং কৌশলেও বিশাল পরিবর্তন এনেছে। আগের মতো অফ সাইডে একের পর এক একঘেয়ে কাটার করা থেকে বের হয়ে এসেছে। আগের চাইতে অপশন আরও বেড়েছে এবং এখন যা করে তা জেনে শুনে এবং ভেবে চিন্তেই করে। সেটা করে বলেই ওকে অনেক আত্মবিশ্বাসী ও রিল্যক্সড মনে হয়। আমি নিশ্চিত আগামীতে ওকে আমরা আরও আক্রমণাত্মক চেহারায় দেখতে পাবো এবং নতুন ও পুরোনো দুই ধরনের বলেই ও সমান কার্যকরী হবে।’