দুধ চা নাকি রং চা এ নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এই দু’ধরনের চায়ের মধ্যে কোনটি বেশি উপকারী, এই বিষয়ে অনেকেরই কমবেশি ধারণা আছে। একদল রং চা পছন্দ করেন, আরেক দলের দুধ চা ছাড়া চলেই না। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, চা অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয়। এই পানীয়ে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। আর সেই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কিন্তু শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া চায়ে উপস্থিত কিছু উপকারী উপাদানের গুণে মন ভালো থাকে কঠিন দিনেও। এমনকি কাজে মন বসাতেও সাহায্য করে। তবে রং চা নাকি দুধ চা পান করলে এসব সুবিধা মিলবে, তা অনেকেরই অজানা। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদদের মতামত হলো, চায়ে থাকা পুষ্টিগুণ পেতে হলে অবশ্যই রং চা পান করতে হবে। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ শামসুন নাহার তাহিরা বলেন, ‘চায়ে আছে কিছু উপকারী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। দুধের সংস্পর্শে এলেই কিন্তু এই অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলোর গুণ হারিয়ে যায়।’
‘ফলে এই চা পান করে তেমন কোনো উপকার মেলে না। বিশেষ করে গ্রিন টি এর মতো উপকারী পানীয়তে চিনি বা দুধ মেশালে পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই ফ্যাট যুক্ত দুধ দিয়ে চা তৈরি করেন। আর দুধে উপস্থিত এই ফ্যাট ওজন বাড়ায়। এমনকি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বাড়াতেও সাহায্য করে। তাই দুধ চা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। এর বদলে গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি, রং চা, আদা চা বা হারবাল চা পান করতে পারেন।’ ‘এছাড়া দুধ চা পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ওজন বেড়ে যাওয়া, অনিদ্রা, পেট ফাঁপা, হজমে সমস্যা, রক্তচাপ ওঠানামা করা, ব্রণ ও স্ট্রেসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।’
এই পুষ্টিবিদ পরামর্শ দেন, রং চা পান করাই শরীরের জন্য ভালো। তবে অতিরিক্ত নয়, অর্থাৎ দিনে ৩ কাপের বেশি চা বা কপি পান করা উচিত নয়। আর যারা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন তাদের উচিত আরও কম পরিমাণে চা পান করা।’ চায়ে চিনি মেশানোর ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা উচিত বলে জানান পুষ্টিবিদ। সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত চিনি খেলে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। এমনকি বাড়তে পারে ওজনও। তাই চিনি যতটা সম্ভব কম গ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে।’ যদিও অনেকেই এখন চিনির বদলে সুগার ফ্রি খান। তবে এই কৃত্রিম মিষ্টিও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। তাই মিষ্টি ছাড়াই চা খাওয়া অভ্যাস করুন।