শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

‘ডায়াবেটিক ধান’ চাষে আশানুরূপ ফলন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪

ডায়াবেটিস রোগীর কথা চিন্তা করে স্বল্প পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট সম্পন্ন পুষ্টিকর ব্রি ধান-১০৫ ‘ডায়াবেটিক ধান’ উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), গাজীপুর। নতুন এই ধান চাষ করে কৃষকরা আশানুরূপ ফলনও পেয়েছেন।
কৃষি বিজ্ঞানীদের দাবি, যার বাজার মূল্য বেশিও পাওয়া যাবে এবং এই ধান ভবিষ্যতে দেশের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এই জাতের ধান প্রথমবারের মতো প্রদশর্নী প্লট হিসাবে চাষ হয়েছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি গ্রামের মাঠে। দুইজন কৃষক এই ধান চাষ করেছেন। ধান কর্তন উপলক্ষে গত ১৬ মে মুশুদ্দির বটতলা গ্রামের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় মাঠ দিবস। মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্রি ধান-১০৫ অন্য জাতের ধান গাছের চেয়ে বৈশিষ্ট্যগতভাবে কিছুটা আলাদা। সবুজ ও খাড়া ডিগ পাতা আর মাঝারি লম্বা ও চিকন ধানের দানা। এটি স্বল্প পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট সম্পন্ন পুষ্টিকর। ডায়াবেটিক রোগীদের খাবারের জন্য উপযোগী। দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। যার বীজ কৃষক নিজেরাই উৎপাদন ও সংরক্ষণ করতে পারবেন।
‘ডায়াবেটিক ধান’ আবাদকারী কৃষক মুশুদ্দি গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, ৫০ শতক জমিতে কৃষি অফিসের পরামর্শে ব্রি ধান- ১০৫ প্রদশর্নী প্লট হিসাবে আবাদ করেছি। এই ধানে রোগবালাই নেই বললেই চলে। একই খরচে অন্য জাতের চেয়ে এই ধানের ফলনও বেশি। বিঘা প্রতি ফলন ২৮ মণ (কাঁচা) পেয়েছি।
অপর কৃষক একই গ্রামের গোলাম মোস্তাফা ভুট্টু বলেন, নতুন এই জাতের ধানের ফলন খুবই ভালো। গড়ে বিঘা প্রতি ২৯ মণ (কাঁচা) পেয়েছি। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), গাজীপুর এই ধান আমাদের নিকট থেকে সংগ্রহ করবেন। তারা নিয়মিত আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি।
ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান বলেন, ধান চাষে এই অ লটি খুবই উপযোগী। আমরা ক্ষেতে গিয়ে নতুন জাতের এই ধান চাষিদের সার্বিক পরামর্শ দিয়েছি। তবে পর্যাপ্ত বীজ পেলে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে।
ধান গবেষণার মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমেনা খাতুন বলেন, দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ডায়াবেটিস রোগীর কথা চিন্তা করে ব্রি ধান-১০৫ ‘ডায়াবেটিক ধান’ উদ্ভাবিত করা হয়েছে। এটি বোরো মৌসুমের একটি কম জিআই সম্পন্ন, রোগবালাই ও পোকামাকড় আক্রমণ রোধক ধান। গড় ফলন হেক্টরে ৭ দশমিক ৬ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টর প্রতি ৮ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। এর জীবনকাল ১৪৮ দিন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর বলেন, দেশে যেন কখনও খাদ্য ঘাটতি দেখা না দেয়। সেজন্য উচ্চ ফলনশীল নতুন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবনে গবেষণায় জোর দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-১০৫ থেকে পাওয়া চালে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম এবং সে কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক ধান’ বলা হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com