মালয়েশিয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাশনুনের ঘোষণা অনুযায়ী এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাত ১২টায় বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশীদের জন্য দেশটির শ্রমবাজার। এর পর থেকে আর কোনো বাংলাদেশী কলিং ভিসার শ্রমিক মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারবে না। এর ফলে ঢাকা ও কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অপেক্ষমান কর্মীদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। সময় বৃদ্ধি না হলে প্রায় ৪০ হাজার অপেক্ষমান কর্মীর মালয়েশিয়া যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ঢাকা বিমানবন্দরে যে শ্রমিকরা অপেক্ষমান তারা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন এয়ার টিকিটের দাম নাগালের বাইরে এবং নিদিষ্ট সময়ের পর প্রবেশ করতে পারবেন না। আর কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে পৌঁছে অপেক্ষা করছেন প্রায় ২০ হাজার কর্মী। তাদের সমস্যা তাদের মালিক ২৪ ঘণ্টা পার হলেও তাদের গ্রহণ করতে আসছেন না বলে অভিযোগ করছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কুয়ালালামপুরস্থ দু’টি আন্তর্জাতিক টার্মিনালে প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশী কর্মী পৌঁছে ফ্লোরে অবস্থান করছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকায় তাদের খাবার ও পানিসহ নানা ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের কর্মী শনাক্তে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নিয়োগকর্তাদেরও। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও অনেকের নিয়োগকর্তা গ্রহণ না করায় তারা কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর ছেড়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারছেন না।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দৈনিক বিদেশী কর্মীদের আগমন হয় ৫০০ থেকে এক হাজার মধ্যে। ২২ মে থেকে আগমনের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত ও যানজট নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত কাউন্টার খোলা হয়েছে ও অভিবাসন কর্মকর্তার সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার এক বিবৃতিতে বলেন, ৩১ মে’র পর আর প্রবেশ সময় বাড়ানো হবে না। শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিমানের টিকিটের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে সিন্ডিকেট চক্র মালয়েশিয়ার ৩০ হাজার টাকার ওয়ানওয়ে টিকিটের দাম এখন ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশী কর্মীরা। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং অ্যাজেন্সির (বায়রা) যুগ্ম মহাসচিব মো: ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় ১০ লাখ কর্মীর মেডিক্যাল করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। দেশটিতে প্রবেশের সময় বৃদ্ধি না হলে প্রায় ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া গমনে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘের এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশী কর্মীরা মালয়েশিয়ায় গিয়ে শোষণের শিকার হচ্ছে। দেশটিতে বাংলাদেশী কর্মীরা শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।