পাহাড়ে কাজুবাদাম চাষের ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। ২০২১সালে কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পাহাড়ের প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে কাজুবাদাম ও কফি চাষ শুর করা হয়। এর মধ্যে উপজেলার রাইখালী ইউনিয়ন এর কারিগরপাড়া ব্লকে ১০জন কৃষকের মাধ্যমে ৫০ একর জমিতে এর প্রায় ৭ হাজার এম-২৩ জাতের কাজুবাদাম গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। রোপণের ৩ বছরের মাথায় প্রায় ৫ হাজার গাছে ফুল আসে এবং এর মধ্যে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার গাছে এ বছর ফল এসেছে।
রাইখালী কারিগর পাড়ার ঐ কৃষি ব্লকের বাণিজ্যিক বাগানের ১০একর জমিতে সম্মিলিতভাবে কাজু বাদাম চাষ করে সফল হওয়া কৃষক অংসুই উ মারমা, উসাই মারমা, পাইসুই খই মারমা ও সাজাই প্রু মারমা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে জানান,আমরা কাপ্তাই কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে আমরা মোটামুটি অনেটাই সফল হয়েছি, আশাকরছি কাজু বাদামের ফলনটাও অনেক ভালো হবে। কৃষকরা জানান, আগামী বছরে এখানকার কৃষক কাজুবাদামসহ কফিচাষে শতভাগ সফলতার মুখ দেখবে।
বর্তমানে রাইখালী ব্লকে কৃণকদের এ বাগানে পাহাড়জুড়ে রং বেরং এর কাজু আপেল এর সাথে কাজুবাদাম ঝুলে আছে। দৃষ্টিনন্দন এ বাগানের বিভিন্ন অংশ ঘুরে একই চিত্র দেখা যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইমরান আহমেদ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) জানান, কাজুবাদাম চাষে ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে কাপ্তাইয়ের প্রত্যন্ত এলাকার পাহাড়ি জনপদে। অত্যধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং উচ্চ মূল্যের ফসল কাজুবাদামের পরীক্ষামূলক চাষে দেখা যায় পাহাড়ের মাটি এ ফসলের জন্য খৃবই উপযুক্ত, এ কারণে পাহাড়ে কাজুবাদাম ফসলের চাষাবাদ দিন দিন কৃষকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে কাজু বাদাম চাষে সফলতা দেখা দেওয়ায় তা পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকায় কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, পার্বত্য লের আবহাওয়া ও মাটি কাজুবাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ অ লে যে বাগান গুলো আছে তাতে অন্যান্য ফলের পাশাপাশি কাজুবাদামের চাষ করা হলে কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি পাহাড়ী এলাকা কাজু বাদাম চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অ ল হিসেবে গড়ে উঠবে।
বাগানে পানি সরবরাহের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর প্রকল্প হতে গাছে পানির পাইপ লাইনসহ ৪ টি সোলার ডিপ ইরিগেশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে।
পাহাড়ে চাষ উপযোগী ফসলের জাত এবং অন্যান্য কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে পাহাড়ি এ অ লে কৃষির উন্নয়নে ১৯৭৬ সালে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে প্রায় ১০০ একর জমিতে গড়ে উঠে রাইখালী পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ফলের জাত উদ্ভাবন করে সফলতা অর্জন করেছে এ কেন্দ্রে কর্মরত বিজ্ঞানীরা। পাহাড়ে এবার কফি এবং কাজুবাদাম চাষ এবং গবেষণা করে সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছে এ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। কাজু বাদাম চাষের এ সম্ভাবনা পাহাড়ে প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।