নকলার সাংবাদিক রেজাউল হাসান সাফিতের কল্যাণে এবং নকলা প্রেসক্লাবের সহযোগিতায় দীর্ঘ ২৩ বছর পর বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতির পরিচয় শনাক্ত এবং অধিকার ফিরে পেল মৃত (এরশাদ ওরফে আশরাফ) মেজো ছেলের বউ জেসমিন আক্তার। আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে শ্রক্রবার (২১জুন) সকালে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় ৭নং টালকি ইউনিয়নের বাজেদ বাড়ি গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা (মুক্তিযোদ্ধার নম্বরঃ ০১৮৯০০০০২৯৭) মো: ইদ্রিস আলীর ৩৫ বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার (মৃত মেজো) ছেলের বউ ও নাতির সন্ধান মিলেছে এবং একে অপরের সাথে পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শ্রক্রবার (২১ জুন) সকালে সঠিক ঠিকানার পরিচয় পেয়ে কুমিল্লা জেলা থেকে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় মেজো ছেলের বউ এবং নাতি এসেছে। এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী বৃদ্ধ বয়সে আদরের মৃত মেজো ছেলেকে না পেলেও এদের পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী বলেন , আমার প্রথম ঘরে ছেলে-মেয়ে ৬ জন নিয়ে সুখের সংসার ছিল। আর প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করি তবে এই ঘরে কোন ছেলে মেয়ে হয় নি। প্রশ্ন আপনার মেজো ছেলে কীভাবে হারিয়ে গেল? বাবা ; আজ থেকে দীর্ঘ ৩৫ থেকে ৪০ বছর আগে মেজো ছেলে আলী আশরাফ ওরফে এরশাদ তিনি আমার বড় ছেলের সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে যাই এবং নিখোঁজ থাকে দীর্ঘ সময়। হঠাৎ একদিন আমার মেজো ছেলে বাড়িতে ফিরে আসে এবং একপর্যায়ে বলে বাবা আমি কুমিল্লায় বিবাহ করছি, এতটুকু বলেই আবার বাড়ি থেকে হঠাৎ কিছু না বলেই চলে যাই। আর এদিকে আমি সঠিক জায়গার পরিচয় না পাওয়ায় ও যোগাযোগ অবস্থা না থাকাই আর মেজো ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে পারি নি! এভাবেই বহুবছর চলে যাই কিন্ত আমার ছেলে আর বাড়ি ফিরে আসে নি নাতি ও ছেলের বউ পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধার মেজো ছেলে বাড়ি থেকে রাগ করে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় চলে আসে। আর সেখানে একজন জেসমিন আক্তার নামের মেয়েকে বিয়ে করে ঘর জামাই হিসেবে থাকে এবং রিকশা চালিয়ে সংসারের চাহিদা মেটাতো হতো। কিছুদিন সংসার করার পর ছয় মাসের বাচ্ছা রেখে স্বামী আশরাফ ওরফে এরশাদ আলছার জটিলতা রোগে মারা যায়। আর (স্ত্রী) জেসমিন আক্তারের কাছে বাড়ির পূর্ণ ঠিকানা না থাকায় মৃত স্বামী আশরাফ ওরফে এরশাদকে কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলায় দাফন করা হয়। এদিকে মৃত আলী আশরাফ ওরফে এরশাদ এর স্ত্রী ৬মাসের ছেলের পরিচয় ও অধিকার পাবার চিন্তা করে অন্য কোথাও বিয়ে করেনি।কারণ তার ছেলে একদিন তার বাবার পরিচয় ও মার অধিকার খুঁজে পাবে। কিন্তু ২০ বছর ছেলের বয়স থাকা সত্যতেও ছেলের বাবার পরিচয় ‘ছেলের পূর্ণ বয়স ও সঠিক জ্ঞান না হওয়া পযন্ত বলে নি ‘মা’ এবংকি ছেলেকে হারানোর ভয়টাও ছিল।এক পর্যায়ে ছেলে মো:খাইরুল হোসেন আশরাফী ২২ বছর পূর্ণ হলে বাবার পরিচয় নিতে মার কাছে সাহায্য চাই ও কান্নাকাটি করে তারপর দাদা শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলীর কথা বলেন। ছেলের মা বলেন, তর বাবা আমাকে বলে গেছেন এতটুকুই আমার শশুর মুক্তিযুদ্ধা ইদ্রিস আলী। এ কথা শুনে ছেলে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে দাদার ঠিকানা বের করে এবং ফেসবুকে গিয়ে নকলা উপজেলা নিউজ. কম গ্রুপে পোস্ট দিয়ে দাদার পরিচয়সহ ঠিকানা চাই। এক পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধা ইদ্রিস আলীর নাতী নকলা উপজেলা নিউজ. কম গ্রুপের এডমিন ও নকলা প্রেসক্লাবের সদস্য রেজাউল হাসান সাফিতের ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে যাবতীয় ঠিকানা ও দাদা বেচে আছে কিনা তা সঠিক তথ্য চেয়ে সাহায্য চাই কিন্ত সাংবাদিক রেজাউল হাসান সাফিত উক্ত মেসেঞ্জারের লেখাগুলো কয়েক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর নজরে আসে এবং সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলীর বাড়িতে গিয়ে সন্ধান নেই ও সকল তথ্য গুলো বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলে পরিচয় গুলো প্রমাণিত হয় ও সাথে সাথেই নাতিকে মোবাইল ফোনে, ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দেন বুধবার (২৯ মে) বিকালে ৭ নং টালকী বাজেদ বাড়ি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাড়ি গিয়ে কাজটি সম্পন্ন করেন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মৌখিকভাবে নাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।তারপর দীর্ঘ ২৩ বছর পর পবিত্র ঈদুল আজহার’ ঈদের আনন্দে ও পরিবারের পরিচয় পাবার খুশিতে শ্রক্রবার ২১ জুন সকালে কুমিল্লা থেকে মেজো ছেলের বউ তার শশুর বাড়ি এবং নাতি তার দাদার বাড়ি শেরপুরের নকলা এসে তাদের অধিকার ফিরে পাই।অতএব,তাদের আলোচিত ঘটনার হাসি কান্নার দু ‘পরিবারের পরিচয়ের মাধ্যমে দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষার অবসান ঘটে। এ আলোচিত ঘটনাটি নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত মেজো ছেলের বউ ও নাতির সন্ধান পেয়ে এলাকায় যেন সবার মাঝে খুশির বন্যা বয়ছে। আর আলোচিত ঘটনাটির জন্য নকলা প্রেসক্লাব’র সদস্য রেজাউল হাসান সাফিত বিশেষ ভূমিকা রাখায় তার পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।