মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন

কাশিয়ানী অবৈধ বেকারীতে সয়লাব

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিনিধি
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে অবৈধ বেকারীতে সয়লাব। এসব অবৈধ বেকারীতে অস্থ্যকর পরিবেশে,বিষাক্ত দ্রব্য দিয়ে মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্য সামগ্রী তৈয়ারী করা হচ্ছে। আর এসব খাদ্য সামগ্রী প্রতিদিনই ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলার সর্ব্বত্র এবং আশেপাশের লোহাগড়া, আলফাডাংঙ্গা, মুকসুদপুর ও বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। জানাগেছে,সরকারী নিয়ম-কানুনের কোন প্রকার তোয়াক্কা না করেই কাশিয়ানী উপজেলা রামদিয়া বাজারের গোডাউনের পাশে, রামদিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে পাশে, ভাটিয়াপাড়া বাজারে, জয়নগর বাজারে এবং জঙ্গল বাগিয়ায় বেপরোয়া ভাবে চালানো হচ্ছে এসব বেকারীর কর্মকান্ড। যুগযুগ ধরে কোন প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই চলছে এসব বেকারীর কর্মকান্ড। বিএসটিআই এর অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন ইউনিয়নের বেকারিগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিশিদ্ধ মেডিসিন সালটু ও রঙ দিয়ে খাদ্যসামগ্রী তৈরি করে বিভিন্ন নামকরা কোম্পানীর ব্র্যান্ডের মোড়কে এসব নাম বিহিন দ্রব্য বাজারজাত করা হচ্ছে। এসব খাদ্য সামগ্রী খেয়ে অনেকেই পেটের পীড়াসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে উপজেলা এলাকার মানুষ এবং আশে পাশের উপজেলার মানুষ। সরেজমিনে দেখেছে, উপজেলার আনাচে-কানাচে অসংখ্য বেকারী গড়ে উঠেছে। সরকারি অনুমতি ছাড়াই মানহীন পণ্য উদপাদন করে বাজারজাত করছে এ সকল বেকারীর মালিকরা। এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, কেক, পাউরুটি, মিষ্টিসহ নানা মুখরোচক খাদ্য পণ্য। স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে বেকারির পণ্য সামগ্রী। বেকারিতে ব্যবহৃত জিনিস গুলো নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। শ্রমিকরা খালি গায়ে ও খালি পায়ে নোংরা পরিবেশে এসব খাদ্য সামগ্রী তৈয়ার করছে এবং পণ্যের পাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছেন। তাদের গায়ের ঘাম ঝরতে দেখা গেছে। হাত পরিস্কার না করেই খাবার মালামাল তৈয়ারী করছে। আটা-ময়দা প্রক্রিয়াজাত করানো কড়াইগুলোও অপরিষ্কার ও অত্যান্ত নোংরা। ডালডা এবং ক্ষতিকর রং দিয়ে তৈরি করা ক্রিম। পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভন ভন করছে। কয়েক দিনের পুরানো ও নোংরা ময়দা ,ডাল্ডা বা তেলেই ভাজা হচ্ছে পন্য সমাগ্রী। ময়লা হাতেই প্যাকেট করা হচ্ছে ওই সব পন্য। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারিসামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বেকারী মালিকরা আট থেকে দশ বছরের শিশু শ্রমিক দিয়ে বেকারীর ভারী কাজ করাছেন। কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের জাংগাল বাঘিয়া এলাকার তিন্নি বেকারী মালিক মোঃ লেলিন মোল্যা এ প্রতিবেদককে জানান, কাগজপত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন ব্যাবসা করে আসছি। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক এসব জানেন। তার সাথে মাঝে মাঝে কথা হয়। বেকারী মালিকদের অনিয়মের এবং নোংরা পরিবেশের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ বুলবুল হোসেন বলেন, বেশীর ভাগ বেকারীর কোন লাইসেন্স নাই। অনুমোদহীন ভাবে পণ্য উৎপাদন করছে।আমার লোকবল নাই, বরাদ্ধ নাই ,আমি একা মানুষ কি করতে পারি। কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা(আরএমও) ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এসব খাবারসামগ্রী খেলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে। পেট ব্যথা, চামরায় চর্মরোগ, কিডনিতে সমস্যা, খাদ্য নালীতে সমস্যা, শরীর দুর্বলসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোক্তার হোসেন বলেন আমি নতুন অবশ্যই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ বুলবুল হোসেন বলেন, কাশিয়ানী উপজেলায় বেশীর ভাগ বেকারীর কোন লাইসেন্স নাই। অনুমোদহীন ভাবে পণ্য উৎপাদন করছে। আমরা এ বেকারী গুলোতে বহুবার অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছি। কয়েকটি বেকারী বন্ধও করেছি। কিন্তু তারা গোপনে রাতের অন্ধকারে মাল উৎপাদন করে বাজারজাত করছে। ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেছি অভিযান পরিচালনা করার জন্য। কোন বেকারীর বিএসটিআইয়ের অনুমতি নেই। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুঃ রাশেদুজ্জামান জানান, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com