মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও বিদ্রোহী গোষ্ঠির মধ্যে সংঘর্ষে ভারী অস্ত্র, মর্টার শেল ও গোলার বিকট শব্দে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভা, শাহপরীর দ্বীপসহ আশাপাশের সীমান্ত এলাকা কেঁপে উঠছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রোববার (১৪ জুলাই) সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমার থেকে শব্দ ভেসে আসছে এপারের বিভিন্ন এলাকায়। তবে আগের চেয়ে এবার গোলার শব্দ বেশি বিকট বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত থেকে বিপরীত পাশে মিয়ানমারের মংডু শহরের সুদাপাড়া গ্রামে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ও ধোয়া দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে।
সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম জানান, কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবারও মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেলো। শনিবার রাতে সীমান্তের অনেকে ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সীমান্ত লাগোয়া শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট এলাকাসহ জালিয়াপাড়া, পশ্চিম পাড়া, উত্তর পাড়া ও আচারবনিয়ার আশপাশের বসত ঘর ও স্থাপনা কেঁপে উঠে।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য ফারিহা ইয়াসমিন বলেন, শনিবার রাতে ও রোববার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপসহ আশপাশের সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ওপার হতে থেমে থেমে ভেসে আসতে শুরু করে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। এতে সীমান্তের পাশে বসবাসকারী স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। তবে এবারের বিস্ফোরণের আওয়াজ গুলো আগের চেয়ে বড় ছিল।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, নাফ নদীর একপাশে টেকনাফ বিপরীত দিকে মংডু টাউনশিপ। মধ্যখানে মাত্র চার কিলোমিটার প্রস্থের নাফ নদী দুই দেশকে বিভক্ত করে রেখেছে। মিয়ানমারে মংডু টাউনশিপের আশপাশের গ্রাম পেরাংপুরু, কাদিরবিল, হারিপাড়া, মংনিপাড়া, নলবইন্ন্যা, সুদাপাড়া, সিকদারপাড়া, নুরুল্লাপাড়া, হাস্যুরাতা ও ফাতংছা এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা বেশি ঘটছে বলে জানা যায়। গ্রামগুলোতে কী ঘটছে, তা এপার থেকে প্রত্যক্ষ করা যায়। সেখানে গোলাগুলি হলে এপারের মানুষ সহজে বিকট শব্দ শুনতে পান। এই জনপ্রতিনিধি বলেন, বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও সীমান্ত এলাকায় হঠাৎ করে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসতে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে সীমান্তের মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও বাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, যেকোন পরিস্থিতিতে কেউ যেন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।