জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ জনতার বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া। এক সপ্তাহ আগে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের অবসানে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে কথা বলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা টিন্বুু। রোববার জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বিক্ষোভ বাতিল এবং রক্তপাতের অবসানে প্রতিবাদকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে টিনুবু বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের সাথে সংলাপের জন্য তিনি সর্বদা প্রস্তুত আছেন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, নাইজেরিয়ায় চলমান বিক্ষোভে নিরাপত্তাবাহিনীর সহিংস দমন অভিযানে অন্তত ১৩ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত সাতজন নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ ও বিক্ষোভকারীদের হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটির পুলিশ।
২০২৩ সালের মে মাসে টিনুবু নাইজেরিয়ায় অর্থনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে পেট্রোল এবং বিদ্যুতের ভর্তুকি বাতিল এবং দেশটির মুদ্রা নাইরার মান হ্রাস করা হয়। যদিও বছরের পর বছর ধরে চলে আসা অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার বিপরীতে দেশটিতে সরকারের
এসব ভর্তুকি অপরিহার্য ছিল। দেশটির সরকারি বিভিন্ন ধরনের নীতি ও জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গত ১ আগস্ট থেকে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামতে শুরু করেন। পেট্রোলের দাম ও বিদ্যুতের শুল্ক কমানোসহ বিভিন্ন ধরনের দাবি নিয়ে অনলাইনে জনমত গড়ে তোলেন এই বিক্ষোভকারীরা।
টিনুবুর ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় লাগোস-ভিত্তিক আন্দোলনকারী ওপেইয়েমি ফোলারিন বলেন, যদি তিনি সংলাপের জন্য আগ্রহী হন, তাহলে তাকে আরও ছাড় দিতে হবে। বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ?প্রতিজ্ঞ বলে জানান তিনি।
গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরকারের নীতির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কঠোর দমনপীড়ন চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি। আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংস্থা, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে জনসাধারণের বিক্ষোভের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও আটককৃতদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা।