বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন ওয়াশিংটনভিত্তিক সংগঠন রাইট টু ফ্রিডমের প্রেসিডেন্ট এবং ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, বিশ্ব জুড়ে আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। আমরা স্বাধীনতার অধিকারকে প্রশংসার সাথে দেখছি। কেননা বাংলাদেশের জনগণ এ সপ্তাহে তাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে। আমরা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করছি। এছাড়া চলমান সহিংসতার বিষয় নিয়েও আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের যেন আইনের আওতায় আনা হয় সেবিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের সহিংসতায় যে প্রাণহানি হয়েছে তার আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন মাইলাম। তিনি বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের এ মর্মান্তিক ঘটনায় আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নির্বাচিত করায় মাইলাম অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তনি বলেছেন, আমরা অন্তর্র্বতীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে ড. ইউনূস ছাড়া আমরা অন্য কাউকে বিকল্প হিসেবে ভাবতে পারি না।
আমরা আশা করি বাংলাদেশি সমাজের সকল উপাদান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রফেসর ইউনূস এবং তার সরকারকে এই মহান দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে।
এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারগুলোর ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন মাইলাম। তিনি বলেছেন, বিগত অন্তর্র্বতী সরকারগুলোর বিষয়ে জনগণের মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আমরা মনে করি অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হবে অবাধ, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন কার্যকর করা। তবে এক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত সেটা সম্ভব হবে না। সরকারকে বাংলাদেশের সমালোচনামূলক স্বল্পমেয়াদি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। এছাড়া দেশের প্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বিভাগ সংস্কারে বেশ কয়েক বছর লেগে যাবে তাই যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে কাজ শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন মাইলাম।
আগের অন্তবর্তীকালীন সরকার শাসনের সুযোগ বেছে নিয়ে মানবাধিকারের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করে মাইলাম বলেছেন, হাসিনার স্বৈরাচারী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা যে আত্মত্যাগ করেছে তার আলোকে আগের ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে। যারা তাদের জীবন দিয়েছেন তাদের সম্মান জানাতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন ওই রাষ্ট্রদূত। এছাড়া তিনি আরও বলেছেন, অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে বাক ও সমাবেশের স্বাধীনতাকে সম্মান করার ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। যারা অপরাধী তাদের ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সর্বশেষে মাইলাম বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।