হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার ১৫-২০ ঘণ্টা ভ্রমণ করার মতো শারীরিক অবস্থা নেই। এ কারণে এই মুহূর্তে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে অনুমতি দিচ্ছেন না তার চিকিৎসকরা। তবে, চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পাসপোর্টসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভ্রমণ করার জন্য শারীরিকভাবে ফিট মনে করলেই চিকিৎসদের অনুমতিতে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিএনপি, হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বিএনপি সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে নানা অজুহাতে বেগম খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট আটকে রেখেছিল পাসপোর্ট অধিদপ্তর। গত ৬ আগস্ট খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার রাতেই তাকে নবায়নকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেওয়া হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, আমাদেরকে দেখতে হচ্ছে ১৫-২০ ঘণ্টা জার্নি করার মতো ম্যাডামের সেই শারীরিক অবস্থা আছে কি না। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে গেলাম, কিন্তু লম্বা জার্নি করার পর যদি শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়, তাহলে তো লাভ নেই। তিনি বলেন, যখন চিকিৎসকরা অনুমতি দেবেন, তখনই আমরা চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেব। আমাদের সব প্রস্তুতি আছে। এখন শুধু চিকিৎসকদের অনুমতির অপেক্ষায় আছি। বর্তমানে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন, জানতে চাইলে এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, আগের মতোই আছেন। উনার শারীরিক অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, দল যখন সিদ্ধান্ত নেবে, ম্যাডামকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া হবে। তখন ভিসা কোনো বাধা হবে না। উনার ভিসা পেতে সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টা লাগবে। বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে তো আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ ও ভালো সম্পর্ক আছে। প্রসঙ্গত, গত ২০২০ সালে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেও তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবার থেকে বারবার আবেদন করলেও ফিরিয়ে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। তবে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লে ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে বিশেষ নির্বাহী ক্ষমতায় মুক্ত করে দেন রাষ্ট্রপতি। বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে আর কোনো বাধা নেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি করে আওয়ামী লীগ সরকার। ৭৪তম জন্মদিনে ছিলেন নাজিম উদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে। পরে কারাবন্দি অবস্থায় ৭৫তম জন্মদিনে ছিলেন হাসপাতালে। এবার ৮০তম জন্মদিনেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনবারের এই প্রধানমন্ত্রী। তবে, এবার তিনি কারামুক্ত।