শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ন

খুলে দেয়া হয়েছে রাঙ্গামাটি কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলকপাট

মোঃ আক্কাস রাঙ্গামাটি
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪

রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর বিপদসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেয়া হয়েছে। রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে গেইটগুলো খুলে দেয়া হয়। এর আগে শনিবার (২৪ আগস্ট) রাত দশটায় বাঁধের দরজা খুলে দেয়ার কথা থাকলেও রাতে শেষ পর্যন্ত খোলা হয়নি। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাতটায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮.২৭ এমএসএল(মিনস সি লেভেল) রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিপদসীমায় পৌঁছেছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। গেইট খুলে দেয়ায় এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক ফিট পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্পিলওয়ের গেইট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৫টি ইউনিটের সবগুলো দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে, ফলে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক ফিট পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। যা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২১৯ মেগাওয়াট। হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. মোশাররফ হোসেন খান বলেছেন, কাপ্তাই হ্রদে পানি বর্তমানে বিপদসীমায় পৌঁছেছে। বাঁধের ঝুঁকি এড়াতে এবং রুলকার্ভ অনুসরণ করে হ্রদের পানি ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবছর এভাবেই পানি ছাড়া হয়। তাই আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন।
এই দিকে ভারতের মিজোরাম ও ত্রিপুরার উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে কাপ্তাই হৃদের পানি টুইটুম্বর হয়ে পড়ায় বাঁধের নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে কাপ্তাই হ্রদ থেকে কিছু পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আরও জানানো হয়, বর্তমানে হ্রদের ইনফ্লো ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইনফ্লো বেশি হলে, অর্থাৎ পানির লেভেল অস্বাভাবিক বাড়লে স্পিলওয়ে গেট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। এদিকে বাঁধ থেকে পানি ছাড়া হলে এর প্রভাব আশপাশের এলাকায় পড়তে পারে সেজন্য এরই মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে জানান কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের। তিনি জানান, গত কয়েকদিন পানিছাড়া নিয়ে অযথা গুজব ছড়ানোর কারণে কিছু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ায় বর্তমানে ১ নম্বর ইউনিট থেকে ৪৬ মেগাওয়াট, ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ৪৯ মেগাওয়াট এবং ২, ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট থেকে গড়ে ৪০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি ও নানান বাস্তবতার কারণে এখন আর সর্বোচ্চ ২৪৫ মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। পানি ছাড়ার আগেই ‘জরুরি বার্তা’ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌবাহিনীর কাপ্তাই ও চট্টগ্রাম ঘাঁটি ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com