রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ অপরাহ্ন

আনসার-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে সচিবালয় রণক্ষেত্র

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪

রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা। এ সময় তারা ছাত্রদেরকে লক্ষ্য করে গুলী ছোড়ে। একপর্যায়ে ছাত্ররা সংঘবদ্ধ হয়ে এগিয়ে এলে উভয় পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আনসার সদস্যরা ছাত্রদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। সচিবালয়সহ আশপাশের এলাকা এ সময় রনক্ষেত্রে পরিনত হয়। আনসার সদস্যদের হামলায় অর্ধশত ছাত্র কমবেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার রাত ৯টার পর এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে তাদের সাথে এসে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গেছে। গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আনসাররা তাদের অপকর্মের জন্য ছাত্রদের উদ্দেশে হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করার খবর পাওয়া গেছে। সংক্ষুব্দদের হাত থেকে বাঁচতে আনসার সদস্যরা শার্ট খুলে খালি গায়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
সচিবালয়ে আনসারের একদল সদস্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেককে আটকে রেখেছেন- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। ‘স্বৈরাচারের দালাল’ আনসার সদস্যদের প্রতিহত করতে তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে রাত পৌনে দশটার দিকে আনসার সদস্যরা পিছু হটেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের পাশে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন।
চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে দুই দিন ধরে আন্দোলন করছেন আনসার সদস্যরা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। তাঁদের আশ্বাস দেওয়ার পরও চাকরি জাতীয়করণ করা হয়নি। দাবি আদায়ের জন্য গতকাল রোববার দুপুর ১২টার পর সচিবালয়ের বিভিন্ন ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন আনসার সদস্যরা। তাঁদের অবস্থানের কারণে সচিবালয়ে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারছিলেন না।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, সচিবালয়ে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে অবরুদ্ধ আনসার সদস্যরা। রাত পৌনে ১০টার দিকে আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এর আগে আনসারের বিভিন্ন দাবি মেনে নেওয়ার পরও বাহিনীটির একটি দল সচিবালয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টাদের আটকে রেখেছেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করেছেন বলে ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সচিবালয়ের সামনে যাওয়ার আহ্বান জানান। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেই তাদেরকে উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন আনসার সদস্যরা। হামলায় অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীর শাহবাগ ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে গত দুদিন ধরে আন্দোলনে রয়েছেন আনসার সদস্যরা। গতকাল রোববার বন্যার্ত মানুষের জন্য ত্রাণবহনকারী কয়েকটি ট্রাকও আটকে দেন তারা। একপর্যায়ে তাদের একাংশ বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঢুকে সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিল করে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। তবুও আনসাররা চাকরি জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে অনড় থাকেন এবং সচিবালয়ের ভেতরে কয়েকজন উপদেষ্টা ও সচিবসহ বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আটকে রাখেন। পরে এ খবর পেয়েই শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের দিকে রওনা হন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে আটক রাখার খবরে সচিবালয়ের উদ্দেশে রওনা হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। এ সময় কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে আনসার সদস্যরা। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম তাদের ফেসবুক পোস্টে আটক রাখার বিষয়টি জানালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জমা হতে থাকে। পরে রাত ৯টায় তারা সচিবালয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোতাসিম বিল্লাহ মাহফুজ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, উপদেষ্টা নাহিদ ভাইসহ হাসনাত ও সার্জিস ভাইকে সচিবালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিপথগামী কিছু আনসার সদস্য ও ছাত্রলীগের প্রেতাত্মারা। আমরা সবাই মিলে সচিবালয়ে মার্চ করে তাদেরকে মুক্ত করে নিয়ে আসব। সবাই যোগ দিন, বিষয় সবাইকে অবগত করুন, অতীব জরুরি।
জরুরি বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
চাকরি জাতীয়করণ দাবিতে আনসার সদস্যদের টানা বিক্ষোভের মধ্যে সচিবালয়ে পাঁচ জন উপদেষ্টার সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সেখানে যোগ দিয়েছেন আনসার বাহিনীর ১০ জন প্রতিনিধিও। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল রোববার রাত পৌনে ৮ টায় এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে যোগ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্য, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব, ক্রীড়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াও অপর উপদেষ্টার পরিচয় জানা যায়নি।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “চাকরি জাতীয়করণ করতে আইনি প্রক্রিয়া এবং সংকট নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা আছে। আনসার সদস্যদের দাবি দাওয়া নিয়ে এ বৈঠক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে৷ তবে তারা যেসব বিষয় তুলছেন, সেগুলো মেনে নিতে সরকারের কিছুটা সময় লাগবে।”
সচিবালয়ের বাইরে থাকা আনসার বাহিনীর একজন সদস্য বলেন, “আমরা এখনও রাস্তায় আছি, তারা আবার বৈঠকে ডেকেছেন, দেখি কী বলে।”
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকার শপথ নেওয়ার পর বিভিন্ন পেশার মানুষদের নানা দাবি নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে বুধবার মাঠে নামে আনসার সদস্যরা। আর দৈনিক ভাতার ভিত্তিতে কাজ করতে রাজি নন তারা; চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানিয়েছেন তারা। আনসার সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী দৈনিক ৫৪০ টাকা চুক্তিতে কাজ করেন। বাহিনীর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জন্য রেশন সুবিধা বরাদ্দ থাকে।
সারা দেশে আনসারের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। এরমধ্যে প্রায় ৫৫ হাজার সদস্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। বাকি ১৫ হাজার সদস্য ‘রেস্ট টাইমে’ থাকেন। কোনো প্রতিষ্ঠানের নতুন চাহিদা পেলে কিংবা আগের কোনো প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত সদস্যদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ‘রেস্টে’ থাকা সদস্যদের পাঠানো হয়। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে বিভিন্ন দায়িত্বেও পাঠানো হয় ‘রেস্টে’ থাকা সদস্যদেরকে।
গত বুধবার আনসার সদস্যরা চাকরি জাতীয়করণের দাবি নিয়ে রাজপথে নামে। সেদিন তারা ঢাকায় শাহবাগ এবং বিমানবন্দর মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এরপর থেকে প্রতিদিনই চলছে তাদের বিক্ষোভ। এই অবস্থানের মধ্যে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে আনসার সদস্যদের কিছু দাবি ‘যৌক্তিক’ মেনে নিয়েই কর্মস্থলে ফিরে কাজে যোগদানের আহ্বান জানায়।
আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ দাবির বিষয়ে একটি ‘যৌক্তিক সমাধান’ হবে। এই কমিটি দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা করে যৌক্তিক সুপারিশ করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। পরে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি সেই সুপারিশ পরীক্ষা করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে। তবে গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ শুরু করেন আনসার সদস্যরা। তাদের সমাবেশের কারণে তোপখানা রোড থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এই সমাবেশে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসেন আনসার সদস্যরা। এক পর্যায়ে তারা ছড়িয়ে পড়েন পুরো এলাকায়।
আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা কয়েকবার বিদ্যুৎ ভবনের পাশের গেইট দিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তাদের ঘেরাওয়ের কারণে সচিবালয় থেকে কেউ বের হতে বা প্রবেশ করতে পারেননি। পরে বিকাল ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কথা বলে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে যান।
এর আগে আনসার সদস্যদরা সচিবালয় ঘেরাও করে রাখায় ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, অফিস শেষের পর সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশিরভাগই সেখান থেকে বের হতে পারেননি। চার দিন ধরে আন্দোলনে থাকা আনসার সদস্যরা গতকাল রোববার সকাল থেকে সচিবালয়ের সব গেইটের মুখে অবস্থান নেন। জাতীয়করণের দাবি পূরণ করেই ঘরে ফেরার কথা বলছেন তারা।
ঘেরাওয়ের এক পর্যায়ে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আনসার থেকে ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। “একই সাথে অন্যান্য দাবি-দাওয়া নিয়ে একটি কমিটি করা হবে৷ এই কমিটি সব কিছু পর্যালোচনা করে আমাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠাবে৷ সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আমরা একটি সিদ্ধান্ত নেব৷” সচিবালয়ের এই বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা যায় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং কয়েকজন আসনার সদস্যকে। বৈঠকে ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলের সিদ্ধান্ত হলেও সে তথ্য পেয়েও মূল দাবি থেকে সরেননি আনসার সদস্যরা। তারা মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন, তাদের দাবি একটাই- চাকরি জাতীয়করণ। তাদের অবস্থানের কারণে সচিবালয়ের সব গেইট বন্ধ থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেক দর্শনার্থী সেখান থেকে বের হতে না পেরে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে সচিবালয়ের ৫ নম্বর গেইট অর্থাৎ প্রেস ক্লাবের দিকের গেইটে দেখা যায়, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী বের হয়ে যাচ্ছেন। পরে সেটি আবার অবরোধ করা হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com