রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি স্বৈরাচারের জামালপুর প্রভাব মুক্ত হয়নি আজও

আবুল কাশেম জামালপুরঃ
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪

জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও উৎকোচ গ্রহণ আজও স্বৈরাচারের প্রভাব মুক্ত হয়নি। ফলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অসংখ্য তরতাজা প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত সফলতা কাজে আসেনি জামালপুর। ছাত্র আন্দোলনে দাবী ছিল কোটা সংস্কারসহ অনিয়ম দূনীতি, উৎকোচ গ্রহন এমনকি স্বেচ্ছাচারিতা দুরীকরণের মাধ্যমে দেশ গড়া। কিন্তু এ জেলায় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরোদ্ধে ডজন খানেক পত্রিকায় দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হলেও নেয়া হয়নি কোন প্রদক্ষেপ। তাই এলাকাবাসিরা হতাশায় ভোগছেন। জানাযায়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.মোফাজ্জল হোসেন চলতি বছর নতুন শিক্ষকদের পদায়ন ও বদলির ব্যাপারে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেগেছেন। তার বিরোদ্ধে অতি সম্প্রতি বেশ ক’জন ভুক্তভোগি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ প্রেরণ করেছেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক খবরপত্র, দৈনিক খোলাকাগজ, দৈনিক ভোরের আকাশ, বাংলাদেশ পোষ্টসহ প্রায় ডজন খানেক জাতীয় দৈনিকে অনিয়ম দূর্নীতির খবর ফলাও করে ছাপা হলেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। ফলে জেলার শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারীসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতা ও এলাকাবাসিরা হতাশায় ভোগছেন। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে জেলার ৭টি উপজেলায় চলতি বৎসর মোট ৩২৫ জন শিক্ষাক (রাজস্ব) ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। এ সব শিক্ষকদের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ২০জুনের মধ্যে যোগদাদের কথা রয়েছে। মেলান্দহ উপজেলায় (রাজস্ব) খাতে ১৩জন শিক্ষকের জেলা অফিসে ২০ জুন/২৪ তারিখে যোগদান করার কথা থাকলেও যোগদান করেন ১২জন শিক্ষক। এ সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত একটি দপ্তর আদেশ দেন এবং রেজিস্টারেও ১২ জন উল্লেখ করেন একজন অনুপস্থিত রাখেন। কিন্তু আসমাউল হুসনা নামে একজন শিক্ষক যোগদান না করায় তিনি ২৫জুন যোগদান করতে এলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.মোফাজ্জল হোসেন খান তাকে যোগদান না করিয়ে প্রথমে ৫লাখ টাকা উৎকোচ দাবী করেন। পরে ঐ শিক্ষকের বাবা আব্দুস ছালাম তাকে কাকুতি মিনতি করে সুদের উপর ৩ লাখ টাকা নিয়ে এসে উৎকোচ দিলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আগের অফিস আদেশ বাতিল করে একই তারিখ ব্যবহার করে আরো একটি অফিস আদেশ দিয়ে যোগদানের নির্দ্দেশ দেন। এই মর্মে জামালপুর পেস্টাবের সভাপতি সম্পাদক বরাবর উৎকোষ প্রদানের বিষয়টি ভুক্তভোগীর পিতা আব্দুস সালাম অভিযোগ প্রেরণ করেছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আরো জানাগেছে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মোফাজ্জল হোসেন খান যোদানের পর থেকে শিক্ষাকদের মৌখিক পরীক্ষায় তিন-চার শ পরীক্ষার্থীর কাছে বেশী নাম্বার পাইয়ে দিতে ৫০ হাজার থেকে ১লাখ টাকা উৎকোচ নিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি নতুন নিয়োগকৃত শিক্ষকদের ভাল সুবিধাস্থানে যোগদানের কথা বলে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষকের কাছে সর্বনিন্ম ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১লাখ ৫০হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব কাজে সহযোগিতা করেছেন তার অফিসের হেডক্লার্ক আলী আহাম্মদ, পিয়ন সিয়াম ও গাড়ী চালক কমল। এছাড়া অপর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মৌলভীরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সানজিদা হক নামে একজন শিক্ষক তিনি দীর্ঘ দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে তাকে বরখাস্ত করা হলে তদস্থলে পশ্চিম লংকারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রহিমা খানম অনলাইনের আবেদন করে বদলী হন মৌলভীরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এদিকে ময়মনসিংহ বিভাগীয় অফিস কর্তৃক অভিযুক্ত শিক্ষককে পুনরায় তার স্থলাভিসিক্ত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে শূন্যে পদ না থাকায় বাধ্য হয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্তমর্তা লংকারচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি প্রেরণ করেন। কিন্তু জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সিটির আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে সম্পূর্ণ অনিয়ম ও সরকারি বিধি বহির্ভূ ভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের নির্দ্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন খান। শুধ তাই নয়,তিনি ১০মার্চ/২৪ ইং তারিখে যোগদানের পর থেকে অফিসে বসবাস করলেও বাড়ী ভাড়া বিল কর্তন না করে উত্তোলন করে সে টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন। তার এমন অনিয়ম-দূর্নীতির কারণে জেলার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী দিন দিন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম জানান নিয়োগপত্র যোগদান পত্র দেরিতে পাওয়ায় যোগদান করতে দেরি হয়েছে পরে ২৫ তারিখে উপস্থিত হলে যোগদানের আমার কাছে প্রথমে পাঁচ লক্ষ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। আমি গরিব মানুষ বাধ্য হয়ে তিন লক্ষ টাকা সুদে করে নিয়ে তাকে দিয়েছি বলে জানান। এ ব্যাপারে জামালপুর জেলার দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন দুর্নীতি অনিয়ম উৎকর্ষ গ্রহণ বন্ধে রন্ধে চলে গেছে রাষ্ট্রের জন্য কখনোই কাম্য নয়। তিনি আরো বলেন স্বেচ্ছাচারিতা অনিময় দূর্নীতি প্রতিরোধের জন্য আজ বহু ছাত্রদের তরতাজা প্রাণ দিতে হয়েছে। তাই আমি এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন খান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি উৎকোষ গ্রহণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।উল্লেখ যে জামালপুরে যোগদানের আগে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে থাকা কালে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতি করায় তাকে ষ্ট্রেন রিলিজ করার ১৭দিন অতিবাহিত হতে না হতেই তাকে জামালপুর জেলায় পদায়ন করা হয় বলে জানাগেছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com