পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমি সরকার অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্বপ্নের ঠিকানা পূর্ণবাসন কেন্দ্রের ১৩০ পরিবারের বাসিন্দারা। বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বরে সকালে ১১ টায় কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নের চায়না টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে স্বপ্নের ঠিকানা পূর্ণবাসন কেন্দ্রের ১৩০ পরিবারের সদস্যরা এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ কথা বলেন। এসময় আন্দোলনকারীরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। এবং দাবিগুলো ৭২ ঘন্টার মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করার কর্মসূচি ও ঘোষণার হুমকি দেন তারা। উক্ত মানববন্ধনে স্বপ্নের ঠিকানা পূর্ণবাস কেন্দ্রের বাসিন্দা বিলকিস বেগম বলেন,‘ বিগত সরকার আমাদের বাড়ি ঘর সব কেড়ে নিয়া গেছে। আমাদের ১৩০ টি ঘর দিয়েছে, কিন্তু দলিল দেয় নাই। তারা আশ্বাস দিয়েছিল, প্রতিটি ঘরে বিশুদ্ধ পানি ব্যবস্থা করবে আমাদের সন্তানদের চাকরি দিবে তাও দেয় নাই। আমরা এখন অনাহারে জীবন যাপন করছি।’ অপর বাসিন্দা কোহিনুর বেগম বলেন,‘শেখ হাসিনা বলেছিল পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে প্রতি ইউনিট বিক্রির শতকরা ৩% আমাদের দিবে কিন্তু তিনি দেয় নাই। তার দেওয়া আশ্বাস সব মিথ্যা ছিল। শেখ হাসিনা আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। আমাদের ৭ টি দাবি ৭২ ঘন্টার মধ্যে মেনে না নিলে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচীর করবো।’ এসময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য মো. মিঠু খান বলেন,‘ বিগত সরকার আমাদের ঘর দেওয়ার নামে দুর্নীতি করেছে। আকাশে মেঘ ডাকলেই আতংকে থাকি। বৃষ্টি নামলেই ঘর থেকে পানি পড়ে। অধিকাংশ ঘরের দেয়াল ধ্বসে পড়তেছে। কোনো সেইফটি ট্যাংকিও করে নাই। দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার চাই আমরা।’ শেখ হাসিনা সরকারের আশ্বাস অনুযায়ী স্বপ্নের ঠিকানার বাসিন্দাদের দাবিগুলো হলো, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট বিক্রয়ের শতকরা ০.৩ পয়সা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দেওয়ার কথা ছিল সেটা বুঝিয়ে দিতে হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে ১৩০টি পরিবার থেকে ১৩০ জনকে চাকরি দিতে হবে। অধিগ্রহণের সময়ে জমির তিনগুণ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে দেড়গুণ টাকা দেওয়া হয়েছে বাকি দেড়গুণ টাকা দিতে হবে। স্বপ্নের ঠিকানা আবাসনের প্রতিটি ঘরের দলিল দিতে হবে। দুর্নীতির সাথে জড়িত পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থা পরিচালক খোরশেদ আলম ও প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল্লাহ মাওলাকে পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়া বিশুদ্ধ খাবার পানির সাপ্লাই ব্যবস্থা করে এ সকল দাবি মেনে লিখিতভাবে দিয়ে দেওয়ার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন,‘দাবিগুলো নিয়ে আমার কাছে আসলে তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।