বাসা দেখে পছন্দ হলে তবেই সংসার গড়তে রাজি হয় স্ত্রী। এমন একটি প্রবাদ রয়েছে পক্ষি প্রজাতি নিয়ে। তবে সব পাখিদের কথা এমনটি শোনা যায় না। কেবল কারিগর পাখি বাবুইদের নিয়ে গল্পটি রয়েছে বলে লোকমুখে শোনা যায়। একসময় গ্রামবাংলার প্রতিটি তালগাছেই তাদের দৃষ্টিনন্দন বাসাগুলো বেশি দেখা যেত। তবে এখন আর সেভাবে চোখে পড়ে না তাদের বিচরণ আর শৈল্পিক চেতনায় তৈরি বাসাগুলো। নিপূণভাবে বোনা তাদের বাসাগুলো অনেক মজবুত হয়। তাদের বাসাগুলো টেকসই এবং উন্নয়নের প্রতিচ্ছবিও বটে। এদের বাসা উল্টানো কলসীর মত দেখতে। বৃষ্টির জল বাসার ভেতরে ঢুকতে না পারে, তাই তাদের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ রাখে নিচের দিকে। আবার যেদিকে যাতায়াতের পথ রাখে, তার বিপরীত দিকে রাখে বসবাসের তথা ডিম পেড়ে তা দিয়ে বাচ্চা লালন পালনের জায়গা। গাছে গাছে ঝুলে থাকা বাবুই পাখির বাসা গ্রাম বাংলার সৌন্দর্য বর্ধনের অনিন্দ্য সুন্দর এক রূপ। প্রকৃতিতি এমন জৌলুসকর দৃশ্য আন্য কিছুতে আর প্রকাশিত হতে দেখা যায় না। সৌন্দর্যের রূপকার এই বাবুই পাখি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আশির দশকের গোড়ার দিকে কৃষি ব্যবস্থাপনায় যখন কীটনাশকের আগমন ঘটেছে, তখন থেকে কেবল বাবুই পাখিই নয়, সমস্ত প্রজাতির পাখিরাই হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। তবে টিয়া, বাজপাখি, কুড়ালী পাখির মতো একেবারে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়নি বাবুই পাখি। মাগুরার শালিখা উপজেলার **** গ্রামে গিয়ে দেখা মিলল এই বাবুই পাখির বাসা। কিছু বাবুইয়ের বিচরণও চোখে পড়লো যেভাবে, তাতে মনে হলো শিল্পী পাখি বাবুই একবারে হারিয়ে যায়নি এখনো। জানা গেছে, বাবুই দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না। তবে বিষয়টি দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বালাদেশে এই প্রজাতির পাখি এখনো ছিঁটেফোটা যা কিছু আছে, এদের রক্ষার ব্যবস্থা না নিলে একেবারেই হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেমন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন এনজিও-ও তত্ত্বাবধানে পাখিদের অভয়াশ্রম রয়েছে। দেশের সর্বত্র এ ব্যবস্থাপনা চলমান থাকলে হয়তো কেবল বাবুইদের রক্ষাই হবে না, সেই সাথে হারিয়ে যাওয়া অনেক পাখিরাও আবার ফিরে আসতে পারে বলে স্থানীয় পরিবেশ সচেতন নাগরিকগণ মন্তব্য করেন।