সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নতুন সরকার এসেছে। আমরা আশা করি, তারা সঠিকভাবে বিষয়গুলো উপলদ্ধি করে সিদ্ধান্ত নেবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রিয়াল পাওয়ার দেয়া হয়েছে। ভালো কথা। তবে এর অর্থ হচ্ছে, প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। অন্যরা কাজ করছে না।
তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, ম্যাজিস্ট্রিসি পাওয়ার এমন এলাকায় দেয়া দরকার, যেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু যেসব এলাকা শান্তিপূর্ণ আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, সেখানে এই ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া সমীচীন হবে বলে আমি মনে করি না। আমি তাই অন্তর্র্বতী সরকারকে অনুরোধ করব, তারা যেন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করেন। কখনোই এমন ব্যবস্থা নেবেন না, যা সামগ্রীকভাবে জাতির জন্য বুমেরাং হয় এবং দেশের মানুষের জন্য ক্ষতিকর হয়।
স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের আন্দোলনে ঠাকুরগাঁওয়ের শহীদ ও আহতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাত ও সহায়তা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে অপরাধের যিনি মূল হোতা- শেখ হাসিনা, তার নির্দেশে হাজার হাজার লোকের প্রাণ গেছে। এই কয়েকদিনে তো গেছেই। তারও আগে ২০১২ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই হত্যা নির্যাতন। আমরা ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে আন্দোলন করছি। সাত শতাধিক মানুষ গুম হয়েছে। হাজার মানুষ খুন হয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের প্রতি মিথ্যা মামালা দেয়া হয়েছে। এখানে যারা বসে আছেন, তাদের কেউ বাদ নেই যাদের বিরুদ্ধে চারটা, পাঁচটা, আটটা, দশটা মিথ্যা মামালা নেই। আমার বিরুদ্ধে ১১১টা মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমি এগারো বার জেলে গিয়েছি। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছয় বছর জেলে ছিলেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। রাষ্ট্র ক্ষমতায় আমরা নেই। এখন অন্তর্র্বতী সরকার গঠন করা হয়েছে। তারা চেষ্টা করছে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এসব বিষয়গুলোর বিচার করতে। এ সময় আন্দোলনে চারজন শহীদ ও আহতদের পরিবারের মাঝে ১৫ লাখ টাকা সহযোগিতা প্রদান করে মির্জা ফখরুল। অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, দফতর সম্পাদক মামুন অর রষিদ, সদর থানা সভাপতি আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদল সভাপতি মহেবুল্লাহ আবু নুর চৌধুরীসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী ও আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।