স্টাফ রিপোর্টার: তার নাম মোহাম্মদ জুবায়ের আহমাদ। তিনি একজন হাফেজ। তার হৃদয়ে সংরক্ষিত আছে আল কুরআন। গত ৫ আগস্ট তার নামের সাথে যোগ নতুন আরেকটি বিশেষণ- শহীদ। ফ্যাসিস্ট হাসিনার জুলুম থেকে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্ত করতে তিনি নেমেছিলেন রাজধানী ঢাকার রাজপথে। আল কুরআনের এ হাফেজ মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে শ^াস নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু খুব বেশী ক্ষণ নয়। মাত্র কয়েক ঘন্টা। সারা দেশ যখন হাসিনা মুক্ত বিজয়ের আনন্দে উচ্ছল। রাজপথে জনতার ঢল। দিনের সূর্য তখন ঢলে পড়েছে পশ্চিম আকাশে। ঘড়ির কাঁটায় বিকাল পৌনে ছয়টা। খিলগাঁও চৌরাস্তা মোড়ের আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম মাদরাসার ছাত্র ও বৈষম্যবিরোধী আরো অনেক শিক্ষার্থীর সাথে বিজয় মিছিলে শামিল হয়েছিলেন ২০২৪ স্বাধীনতা সংগ্রামী হাফেজ মোহম্মদ জুবায়ের আহমাদ। হাসিনার দোসররা তখনও হিং¯্র আর আগ্রাসী। অস্ত্র হাতে পালিয়ে যেতে যেতে উন্মাদের মতো বিজয় মিছিলে গুলি করে পুলিশ ও আওয়ামী ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা । গুলিতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। হাফেজ মোহাম্মদ জুবায়ের আহমাদসহ আহতদের দ্রুত খিদমাহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে অব্স্থা গুরুতর বিবেচনায় তাকে মুগদা সরকারি হাসপাতলে রেফার করেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। মুগদা সরকারি হাসপাতলে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি ৭টা ২৯ মিনিটে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আহবানে জান্নাতের পাখি হয়ে উড়ে যান। শাহাদাত বরণ করেন মোহাম্মদ জুবায়ের আহমাদ। আল কুরআনের হাফেজ সন্তানকে হারান বাবা কামাল উদ্দিন। মোহাম্মদ জুবায়ের আহমাদের মা-বাবার বুক জুড়ে এখন শুধু শূন্যতা। তবে দেশের জন্য এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তাদের পুত্র শাহাদাত বরণ করায় তারা গর্বিত। শহীদের পিতা কামাল উদ্দিন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে তার সন্তানের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান এ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণে এ সময় অংশ নিয়েছেন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ডিএমপি সুদ্বীপ কুমার চক্রবর্তী, মো. সাইদুর রহমান আজাদ (এএসপি ডিবি), খিলগাঁও থানার ওসি সালাহউদ্দিন মিয়া, খিলগাঁও থানার এস আই যথাক্রমে সুদ্বীপ কুমার বিশ^াস, বদরুল আলামীন, বাবুল, সোহেল রানা,আবু জাহিদ তুহিন, আশরাফুল ইসলাম,শামীম, শিহাব হোসেন, মোহাম্মদ তারেক নাজির, মো. মোজাম্মেল হোসে, মো. জামাল হোসেন, মনিষ ঘোষ, ওবায়দুর রহমান, আবদুল রহমান, আরসেল তালুকদার, শিহান রহমান শোভন, রবিউল হোসেন, নিজামউদ্দীন, মফিজ, সেলিম হোসেন, ওয়াদুদ তালুকদার, কামালসহ শেখ হাসিনার দোসররা।
মুক্ত স্বাধীন এ বাংলাদেশে ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সময়ের দাবি, এ দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে হাসিনার মতো নতুন নতুন ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার মাথাচাড়া দিবে, যা কারো কাম্য নয়।