শারদীয় দূর্গাপুজা উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের কাঁটা তারের বেড়ার দুইপাশে ভারত-বাংলাদেশের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। সীমান্তে দুই বাংলার শতশত মানুষ ভিড় করছেন। কেউ পুজা দেখতে, কেউ তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে। তবে কঠোর নিরাপত্তায় আছে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ। রোববার (১৩ অক্টোবর) শারদীয় দূর্গাপুজার মহাদশমী। সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও পিকআপে করে দর্শনার্থী ও ভক্তরা আসছেন হিলি সীমান্তে। ওদিকে ভারত সীমান্তও বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন বাংলাদেশের পুজা দেখতে। কিন্তু সীমান্তে কাঁটার তারের বেড়া এবং বিজিবি ও বিএসএফের কঠোর মনোভাবের কারণে এপার থেকে ওপারে যেতে না পারছেন কেউ। তাই দুই পাশে দাঁড়িয়ে দুই বাংলার দর্শনার্থীরা একে অপরকে দেখছে, ছবি তুলছে, আবার হাত আর চোখের ইশারায় কথা বলছেন অনেকেই। কাছে না পাওয়ার দুঃখটাকেও এভাবে আনন্দ নিচ্ছে তারা। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে দুই বাংলাকে ভাগ করে দিলেও আমাদের মনকে তো আর ভাগ করতে পারেনি, আগে তো দুই বাংলা একই ছিল। তাই ভালোবাসার টানে, প্রাণের টানে, নাড়ির টানে আমরা ছুটে এসেছি সীমান্তে। আমাদের অনেক আত্মীয় স্বজন ভারতে আছে। দুর থেকে অনেক দিন পর ঐপারে স্বজনদের এক নজর দেখতে পেলাম, এটাও অনেক শান্তি। রংপুর থেকে আসা প্রদীপ কুমার বলেন, এক সময় এই দুই দেশ এক ছিলো। দেশ ভাগ হওয়ার পর সব আলাদা। ঐদেশে আমার অনেক আত্মীয় স্বজনরা আছেন। প্রতি বছর পুজার সময় ভারতে যেতাম। বর্তমান ভিসা বন্ধ, তাই যাওয়া হয়নি। তবে একটু প্রশান্তি পাবার আশায় এখানে আসছি। ওপারে আত্মীয়রা আসছে। মাঝখানে কাঁটা তারের বেড়া, কাছে যেতে পারছি না। কাছে যেতে না পারলেও দুর থেকে চোখের দেখা আর হাতের ইশারায় কথা বলা হচ্ছে। এতেই অনেকটা শান্তি পাচ্ছি। হিলি চেকপোস্টের দায়িত্বরত বিজিবির কমান্ডার নায়েব সুবেদার অসিম উদ্দিন জানান, আজ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসবের শেষদিন, প্রতিমা বিসর্জ্জনের দিন। সীমান্তের দুই পাশে দুই দেশের মানুষ অবস্থান করছে। তারা একে অপরকে দুর থেকে দেখছে। আমরা কঠোর নিরাপত্তার সাথে সীমান্তে অবস্থান করছি। এখানে কোন রকম বিশৃঙ্খলা হবে না আশা করছি। হিলি ইমিগ্রেশন ওসি আরিফুল ইসলাম জানান, হিন্দু ধর্মাবলাম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পুজা দেখতে আসা-যাওয়া করতো। কিন্তু টুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় দুই দেশের যাত্রী পারাপার কম। শুধু মেডিকেল ভিসার যাত্রী যাওয়া আসা করছে। এই কারণে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে। তবে শুধু মেডিকেল ভিসার যাত্রীরা পারাপার স্বাভাবিক আছে।